নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বাহেরকুচি এলাকার অভিজাত ঢালী আম্বার নিবাস রিপোর্টের ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। বহুল প্রচলিত রাস্তার পাশে একটি নামমাত্র বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করে খোলা আকাশের নিচে ফেলা হচ্ছে ওই রিসোর্টের সমস্ত ময়লা-আবর্জনা।
এলাকাবাসী বলেন, এ সড়ক দিয়ে মধ্যপাড়া ইউনিয়নে ১৫ হাজার মতো লোক প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। এছাড়াও স্কুল-কলেজের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীরাও যাতায়াত করে। কিন্তু রাস্তার পাশে উন্মুক্ত ময়লার ভাগাড় থাকায় নাকে ধরে যাতায়াত করতে গিয়েও বমি আসে।
এছাড়াও স্থানীয়রা আরও বলেন, কয়েকমাস আগে ঢালী আম্বার নিবাস রিসোর্টে বাসি ও পঁচা খাবারের জন্য লাখ টাকা জরিমানা করেছে প্রশাসন। এরপরও তারা এলাকার পরিবেশ দূষণ করে চলছে প্রতিনিয়ত। এলাকার কতিপয় ব্যক্তির অভিযোগ, তাদের জমি জোর করে দখলে নিয়ে ঢালী আম্বার নিবাসের মালিক নজরুল ইসলাম ঢালী এ ময়লা ফেলার স্তূপ নির্মাণ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাহেরকুচি ঢালী আম্বার নিবাস রিসোর্টের উত্তর পাশ দিয়ে মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাথে সংযুক্ত হওয়া রাস্তার পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে ঢালী আম্বার নিবাসের ময়লা রাখার ভাগাড়। রাস্তার পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা। যাতায়াতকারীরা নাকে আঙ্গুল দিয়ে চেপে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছেন। উন্মুক্ত মায়লার ডাস্টবিন হতে পঁচা খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে কুকুর ও কাকের। ওই দুর্গন্ধে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে ওই স্থানের চারপাশে। দুর্গন্ধ এতটাই প্রকট যে অনেক যাতায়াতকারীরা বমি করে দিচ্ছেন।
তবে, অনেকেই তার বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করলেও তারা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে ভয় পান। এলাকাবাসীর একটাই কথা, সমস্যা তো প্রতিনিয়ত হয় কিন্তু কি করার আছে আমাদের?
স্থানীয় জাহিদ বলেন, একটু আগে আমি এখান দিয়ে গিয়েছি আমার বমি এসে পড়েছে। যাওয়ার কোন স্কোপ নেই। নাক ধরে গেলেও বমি এসে যাবে। মূল একটা রাস্তার পাশে এখানে মুরগির নাড়িভুড়িসহ বিভিন্ন ময়লা ফেলা হচ্ছে। যে কেউ এখান দিয়ে হাঁটলে তার এমনি বমির মতো হয়ে যায়।
ঘুরতে আসা শিহাব বলেন, অভিজাত রিসোর্টের পাশে এভাবে ময়লা ফেলা এটা ভাবনার বিষয়। তাও মূল একটা রাস্তার পাশে এত পরিমাণ ময়লা ফেলা হচ্ছে যে এখান দিয়ে নাক ধরে হাঁটলেও যে কারো বমি এসে যাবে।
স্থানীয় রাসেল বলেন, অনেকবার তাকে বলা হয়েছে। কিন্তু সে কারো কথাই শোনে না। এখানে ময়লা ফেলে। এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় লেবার শ্রমিক মুজিবুর বলেন, আমি এদিক দিয়ে বড় ট্রাক নিয়ে যাওয়া আসা করতাম। কিন্তু সে (নজরুল ইসলাম ঢালী) আমাকে সরকারি রাস্তা দিয়ে ট্রাক নিয়ে যেতে আসতে বাঁধা দেয়। আর তিনি ময়লা ফেলছেন রাস্তার পাশে উন্মুক্ত জায়গায়, কেউ বলার সাহস পায়না।
মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমরা ময়লার বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বলেছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন সমাধান করবেন।
অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম ঢালী বলেন, ময়লার স্তূপ নির্মাণ কাজটি প্রক্রিয়াধীন এখনও শেষ হয়নি।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমি আপনার কাছ থেকে সর্বপ্রথম অবহিত হলাম। অবশ্যই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিব।