নিজস্ব প্রতিবেদক
সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের ফেগুনাসার গ্রামে জায়গা নিয়ে শিব মন্দির কমিটি ও ক্রয়কৃত জমির রেকর্ডীয় মালিক দাবীদারের মধ্যে চলছে বিরোধ ও আদালতে মামলা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে শৃঙ্খলা অবনতির পরিস্থিতির খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সহকারি পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম মন্দির এলাকা পরিদর্শন করে উভয়পক্ষের সাথে মতবিনিময় করেন।
জানা যায়, গতকাল সোমবার সকালে মন্দিরের পশ্চিম পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে ও একটি একচালা ছোট ঘর তুলে সেখানে পবিত্র কোরআন শরীফ পড়ছিলেন ক্রয়কৃত রেকর্ডীয় মালিক জহিরুল ইসলাম বেপারীর মেয়ে সুইটি। এ বিষয়ে মন্দির কমিটির লোকজন প্রশাসনকে অবহিত করে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষকে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলা হয়। এসময় এএসপি উভয়কে জানান, আদালতে যেহেতু মামলা চলছে তাই আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া যার যার অবস্থানে থাকবেন। এমন কোন কাজ কেউ করবেন না যাতে করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল রায় জানান, ৮ শত বছরের পুরনো মন্দির এটি। আগে এর ২ একরের বেশি জায়গা ছিলো। বর্তমানে ১৮ শতক জায়গাও নেই। তারা কিভাবে জায়গা কিনে মালিক হলো তাই আদালতে মামলা দেওয়া হয়েছে, মামলা চলমান রয়েছে। তার মধ্যে তারা আবার মাঝেমাঝে গাছের চারা লাগায়, বেড়া দেয়। নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে।
সুইটি জানান, আমার বাবা প্রায় ৩৫ বছর আগে এই জায়গা কিনেছে। এতোদিনে কোন সমস্যা ছিলো না। গত ৭/৮ বছর যাবৎ তারা নানা সমস্যা করে মামলা করেছে। আমার বাবা আমাদের ক্রয়কৃত এ জমি থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের কথায় ১১ শতাংশ জায়গা ছেড়ে দিয়েছে। এখন আবার তাদের আরো জায়গা লাগবে। আমাদের জায়গায় আমরা কাজ করলে তাদের নাকি সমস্যা হয়। আমরা সম্পীতি নষ্ট করতে চাই না। মন্দিরের দক্ষিণে আরো জায়গা ছেড়ে দিয়েছি। এখন আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম জানান, বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে উভয়ের মামলা চলামান আছে। আমরা শুনতে পাই তাদের মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। গিয়ে দেখি, মন্দিরসংলগ্ন পশ্চিম পাশে একটা ছোট টিনের ছাপড়া ঘরে কোরআন শরীফ পড়ছেন মহিলারা। তারা জানায়, তাদের মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। এজন্য কোরআন তেলাওয়াত করা হচ্ছে। তাদের বুঝিয়ে বলি, বাড়িতে গিয়ে একটা পরিবেশে পড়লে ভালো হয়। কোরআন একটি পবিত্র জিনিস। যেখানে সেখানে না পড়লেই ভালো। তারা বুঝতে পেরে বাসায় চলে যান। কোনপ্রকার সমস্যা সৃষ্টি হয়নাই।