নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ব্যক্তি মালিকানা জায়গা দেখিয়ে টিআর প্রকল্প পাস করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারি প্রকল্পের রাস্তা বাস্তবায়ন না করায় জায়গার মালিকদের রসাতলে পরে ৩ পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের দক্ষিণ চাইনপারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের দক্ষিণ চাইনপাড়া গ্রামের মিজান শেখের বাড়ি থেকে আলম শেখের বাড়ি পর্যন্ত একটি রাস্তা তৈরি করার জন্য ৯২ হাজার টাকা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের টি.আর প্রকল্প বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ইউনিয়নের ৭নং ইউপি সদস্য মোঃ আবু সাঈদ মাদবর। ইউপি সদস্য আবু সাঈদ মাদবর মিজান শেখকে রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব দেয়। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সুমন শেখ তার জায়গায় নিজ টাকায় ডোবা বালু দিয়ে ভরাট করে। ইউপি সদস্য আবু সাঈদ ও মিজান সেই বালু ভরাট দেখিয়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করে। কিন্তু সেখানে রাস্তা না করে ব্যক্তি স্বার্থে পুকুর ভরাট করে দিয়েছে ইউপি সদস্য মোঃ আবু সাঈদ মাদবর। বাশের বেঁড়া দিয়ে নান্নু শেখ, কাশেম শেখ ও হাসেম শেখ বাড়ীর লোকজনের যাতায়াত বন্ধ করে দেয়া হয়। আটকে পড়া বাড়ীর এক মহিলা বলেন, আমরা এখন বাসা থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের পিছনে সরকারি রাস্তা হওয়ার কথা ছিল আমার বাসার উত্তর পাশ দিয়ে। সরকারি রাস্তা হওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে জায়গাও রেখে দিয়েছে। এখন সেই রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বের হওয়ার জন্য আরেকজনকে সুপারিশ করে এখন আমরা বের হচ্ছি। সুমন শেখ বলেন, এটা আমার দাদার কেনা জায়গা, এখানে সরকারের কোনো প্রজেক্ট হয়েছে এটা আমরা জানি না এবং আমাদেরকে কেউ জানায়নাই। আমাদের টাকা দিয়ে বালু ভরাট করেছি। তাই বাড়ীর দেয়াল দিয়েছি। চেয়ারম্যান সাহেব বলে গেছে এটা আমাদের ভুল না। সরকারি টাকা আসুক বা না আসুক আমরা জানি না। আমাদের জায়গায় কোন সরকারি মাটি ফেলা হয়নাই। চেয়ারম্যান সাহেব দুইটা সালিশ করেছে এই জায়গার বিষয়ে। এখানে বলা হয়েছে যে ভুল করেছে মিজান। অভিযুক্ত মিজান শেখ বলেন, সাঈদ মেম্বার সাহেব আমাকে ৭২ হাজার টাকা দিয়েছে। পাশের বাড়ির তারা জায়গা না দেওয়ায় আমি রাস্তা আমার জমি ভরাট করছি। আমার ব্যক্তিগত রাস্তা দিয়ে কাউকে যেতে দিবোনা। আমার পাশের বাড়ির সুমনরা সরকারি যে রাস্তা বানানো হয়েছে সেই জায়গায় ওয়াল দিয়ে রেখেছে। সেই জন্য আমিও আমার জমির উপর দিয়ে বেঁড়া দিয়ে রেখেছি। তারা যদি ওয়াল ভেঙে দেয় তবে আমিও আমার জমি থেকে বেঁড়া সরিয়ে রাস্তা দিয়ে দিব। দরকার হলে আমি প্রকল্পের টাকা ফিরিয়ে দিবো। জৈনসার ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড সদস্য আবু সাঈদ মাদবর জানান, আমি মিজানকে টাকা দিয়েছি রাস্তা করার জন্য। গতকালকে চেয়ারম্যান সাহেব দুই পক্ষকে ডেকেছিল, তারা আসেনি। তখন চেয়ারম্যান সাহেব বললো সাবেক মেম্বার আর তোমরা বসে এটা মীমাংসা করো। এভাবেই আছে এখনো কোন সমাধান হয়নি। প্রকল্পটি ২০১৮-১৯ সালের বরাদ্দ আসছিল। জৈনসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু বলেন, আমি প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছি। মেম্বার রাস্তা তৈরি করছে। আমি মেম্বার ও মিজানকে বলেছি সরকারি টাকার রাস্তা বুঝাইয়া দিতে। সরকারি টাকার রাস্তা কোথায় সেটা তারা বের করে দিবে।