নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ইছাপুরা ইউনিয়নের লোহার পুকুরপাড় এলাকায় সুদের টাকা না দিতে পারায় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাড়ি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে প্রভাবশালী আব্দুল কুদ্দস হাওলাদার ও তার বাহিনী বাড়িটি দখল করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, ২০১২ সালে আব্দুল কুদ্দুসের (৫২) সাথে শেখ মতিউর রহমানের কন্যা মরিয়ম আক্তার তাপন (৫০) একটি সমিতি করে। সেখানে ২ বছর মেয়াদে ৩ বারে মোট ৬ বছর টাকা জমা রাখে এবং জমানো টাকার থেকে লোন নেয় মোট ৭ লক্ষ টাকা। তার বিপরীতে সুদসহ ১৬ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে। তার কিছুদিন পর সুদেআসলে আব্দুল কুদ্দুস ৩৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় ৩ শত টাকার সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখে। তার কিছুদিন পরে আব্দুল কুদ্দুস বাড়ি দখল করতে আসে। তখন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন হাওলাদার উভয়পক্ষকে ডেকে ঝামেলা সমাধান করে ৩৩ লক্ষের পরিবর্তে ২৫ লক্ষ টাকা দিতে বলে। তখন মরিয়ম নগদ ১ লক্ষ টাকার চেক দেয় ও বাকি টাকা দেয়ার জন্য সময় নেয়। কিছুদিন পরে আব্দুল কুদ্দুস দুটি মামলা করে মরিয়মের বিরুদ্ধে। মামলা করার পর থেকে মরিয়ম ও তার ছেলেদের বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় ও জায়গা দখল করে নিয়ে যাবে বলে। এ বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ সিরাজদিখান থানায় মরিয়ম আক্তার বাদি হয়ে একটি সাধারন ডাইরি করে যার নাম্বার-১০৩৬। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও থানায় একাধিকবার বসেও কোন সমাধান হয়নি। সরেজমিনে দেখা যায়, ইছাপুরা ইউনিয়নের লোহারপুকুর এলাকায় একটি বাড়ির সামনের গাছ লাগানো জায়গায় দুইটি নতুন টিনের ছাপড়া ঘর তৈরি করা হয়েছে। সেখানে কিছু গাছও কাটা হয়েছে। সামনে একটি বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। মরিয়ম আক্তার তাপন বলেন, আমি সকালে উঠে দেখি কুদ্দুস ও তার বদলিরা আমাদের বাড়িতে তৈরি করা বেড়া ও খাম নিয়ে আসছে। তখনি সাথে সাথে বের হয়ে দেখি বাড়ির সামনে ৫০/৬০ জন হাতে রামদা, কুড়াল, চাকু ও ডাসা নিয়ে হাজির হয়েছে। আমরা ঘর তুলতে নিষেধ করায় তারা আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। আমাদের গাছগুলো কেটে তারা জোর করে ঘর তুলে রেখে গেছে। আমি সিরাজদিখান থানায় অনেকবার ফোন করলেও থানা থেকে সাথে সাথে কোন পুলিশ আসেনাই। যখন ঘর তোলা শেষ হয়ে গেছে তখন এখানে পুলিশ আসছে। আমি এই জুলুমের বিচার চাই। আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার বলেন, আমি কারো বাড়ি দখল করিনাই। আমি সরকারি জায়গায় ঘর তুলেছি। আমি মরিয়মদের থেকে জায়গাটা কিনে নিয়েছি। সরকারী সম্পত্তি কিভাবে কিনেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই এলাকায় অনেকেই স্ট্যাম্পের মাধ্যমে এই সম্পত্তি ক্রয় করে। আর মরিয়ম এই সম্পত্তিটি বিক্রয় করায় সরকার তার লিজও বাতিল করে দিয়েছে। মরিয়ম আমার কাছে বিক্রয় করার পরেও এই জায়গাটি কিছুদিন পূর্বে গোপনে অন্য আরেক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম জালাল উদ্দিন বলেন, সকালে ঝামেলার কথা শুনে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ বিষয়ে কোন পক্ষ এখনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।