নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার পর থেকে নানান বির্তক দেখা দিয়েছে। ক্রমেই বাড়ছে ক্ষোভ। গত ১২ জুলাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ মো. আব্দুল্লার বাড়িতে এম হায়দার আলীকে সদস্য সচিব ঘোষণা দেয়ার পর থেকে উপজেলার সর্বত্র চলছে সমালোচনার ঝড়। এছাড়া স্থানীয় তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক নেতা জানান, গত ৭ ফেব্রুয়ারী মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হাই ও সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দস ধীরনকে আহ্বায়ক ও আলী আনছার মোল্লাকে সদস্য সচিব করে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট ৯০ দিনের জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটির ৪৯ দিনের মাথায় কমিটির বিরুদ্ধে কোন কারণ না দেখিয়েই শেখ মো. আব্দুল্লাহকে আহ্বায়ক করে সদস্য সচিব ছাড়াই একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। সে আহ্বায়ক হওয়ার পর থেকেই তার মত সাংগঠনিক কাজ করে যাচ্ছে। এতে করে উপজেলা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
সিরাজদিখান থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আওলাদ হোসেন বলেন, আমাদেরকে না জানিয়ে গোপনেই এম হায়দার আলীকে থানা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিকভাবে করা হয়েছে। নিয়ন অনুযায়ী উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব নির্বাচন করে জেলা কমিটি। এছাড়া সদস্য সচিব নির্বাচনের আগে একটা মিটিং কল করতে হয় সেখানে পরবর্তী মিটিংয়ে সদস্য সচিব নেয়ার ব্যাপারে প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাব গৃহীত হলে পরবর্তী মিটিংয়ের পূর্বে আহ্বায়ক কমিটির সকল সদস্যকে এজেন্ডাসহ চিঠি ইস্যু করতে হয়। এখানে তারা এমন কোন প্রক্রিয়া না করেই ঈদ পুনর্মিলনী করে আব্দুল্লাহ সাহেব নিজেই প্রস্তাব দিয়ে এম হায়দার আলীকে সদস্য সচিব করে নেয় যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।
সিরাজদিখান থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক সদস্য আব্দুল কুদ্দস ধীরণ বলেন, আমার রাজনীতির ৪০ বছরেও দেখিনি শুধু আহ্বায়ক দিয়ে কোন উপজেলার কমিটি দেওয়া হয়। আমি দীর্ঘদিনের সিরাজদিখান থানা বিএনপির সভাপতি। গত ফেব্রুয়ারী মাসে আমাদের পুরাতন কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আমাকে আহ্বায়ক ও আলী আনসার মোল্লাকে সদস্য সচির করে একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। আমদের কমিটির কোন দোষ-ত্রুটি না দেখিয়েই ৪৯ দিনের মাথায় নতুন করে থানা কমিটি দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বর্তমান আহ্বায়ক স্বেচ্ছাচারিতা দেখিয়ে গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করেই তার যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এই উপজেলায় আর বিএনপির রাজনীতিই থাকবে না। সিরাজদিখান থানা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, রেজুলেশন করেই তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানার থাকলে হায়দারের সঙ্গে কথা বলেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কোনো প্রস্তাবনা আসেনি। বর্তমানে আমার কমিটির সভাপতি সাহেব অসুস্থ। তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। যদি প্রস্তাবনা আসে আমি ও আমার আহ্বায়কসহ বিষয়টি যাচাই করে গঠনতন্ত্রের প্রক্রিয়ায় থাকলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। আমাকে তারা দাওয়াত করেছিল অসুস্থতার কারণে সেখানে উপস্থিত হতে পারিনি। এত বড় একটি উপজেলা শুধু আহ্বায়ক দিয়ে চালানো সম্ভব না। তাই আমি তাদেরকে আহ্বায়ক কমিটির সকলকে নিয়ে মিটিং করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সদস্য সচিব দিতে বলেছি।
সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ বাড়ছে
আগের পোস্ট