নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, আমরা উদার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার ও সমমর্যাদা রয়েছে। সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে সমুন্নত রাখতে হবে। সমাজে সৌহার্দ্য, সাম্য, শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় আত্মসংযম ও আত্মত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে।
গতকাল সোমবার শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার কমলাঘাট হরিসভা মন্দিরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। এসময় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং নতুন ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। গোপাল তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুস সালাম, শ্রী সমর ঘোষ, অজয় চক্রবর্তী, সুশান্ত তালুকদার, নবীন রায়, সুবীর চক্রবর্তী, অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, শেখ মনিরুজ্জামান রিপন, মনিরুজ্জামান শরীফ, প্যানেল মেয়রসহ মিরকাদিম পৌরসভার সকল মেয়রগণ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে মাতৃকার মুক্তির জন্য হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই রক্ত দিয়েছেÑ প্রাণ দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান ইশতেহার ছিল- বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশ সবার দেশ। যার যার ধর্ম সে স্বাধীনভাবে পালন করবে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান প্রভৃতি সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব, সমর্থকদের ওপর পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করেছে। আর এককভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর লোকেরা সবচেয়ে বেশি বিপদগ্রস্ত ছিল।
তিনি বলেন, প্রতিটি নাগরিক তার নিজ নিজ ধর্ম সম্মানের সঙ্গে পালন করবেন। এটাই ছিল ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা। সেই চেতনায়ই গড়ে উঠেছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘রাজনীতিতে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান বলে কিছু নেই। আমার কাছে সবাই মানুষ।’ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেভাবেই মানুষকে দেখতেন।
তিনি বলেন, শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো- “জীব হচ্ছে শিব”। যা তাঁর মন্ত্রে পরিণত হয়েছিল। তিনি দরিদ্র নারায়ণ সেবার ধারণা উদ্ভাবন করেন। অজ্ঞ, কাতর, পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজে, তাদের স্বমহিমায় উদ্ভাসিত করার লক্ষ্যে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। শ্রী কৃষ্ণের দর্শন, প্রেমের বাণী, জীবনকর্ম মানবসমাজকে সৌভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।