নিজস্ব প্রতিবেদক
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরি পারের জন্য যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ১৩টি ফেরি চলছে। তবু যান পারাপারে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঘাট কর্তৃপক্ষকে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে গতকাল শুক্রবার নদীর ওপারে (কাঁঠালবাড়ি) যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি মানুষের ভিড় দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শিমুলিয়া ঘাটে মানুষের ভিড় বেড়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে শিমুলিয়া ঘাটে ফেরি পারাপারের জন্য কমপক্ষে ৬ শত যান অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে, এর মধ্যে ছোট গাড়ির সংখ্যাই বেশী। গতকাল শুক্রবার শিমুলিয়া ঘাটে এ দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। একইসঙ্গে নদী পার হওয়ার জন্য আসছে হাজারো মানুষ। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোঃ ফয়সাল জানান, রাতে পণ্যবাহী যানের চাপ, সকালে ছোট গাড়ির চাপ থাকে। ঘাটে কমপক্ষে ছয় শতাধিক গাড়ি ফেরি পারের অপেক্ষায় আছে, যার বেশিরভাগই ছোট গাড়ি। ঘাটের পার্কিং স্থানে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় যানবাহন মহাসড়কে অপেক্ষা করছে। মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুর রায়হান জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎ করে শিমুলিয়া ঘাটে গাড়ির চাপ বাড়ে। ধারণা করছি, ঈদের ছুটি কাটাতে লোকজন ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে। মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক সিরাজুল কবির জানান, মনে হচ্ছে ঈদের কেনা-কাটা শেষে লোকজন ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছে। দক্ষিণবঙ্গমুখী শত শত লোক গতকাল শুক্রবার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি দিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটছে। মাত্র কয়েকদিন আগেও ঢাকামুখী যাত্রীর ঢল ছিল, আর হঠাৎ গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গমুখী যাত্রীর ঢল। এই নৌ কর্মকর্তা আরো জানান, কেউ কেউ যে আশায় তারা ঢাকা গিয়েছিল তা হয়তো পূর্ণ না হওয়ায় তারা আবার বাড়ি ফিরছে। সরকার সাধারণ ছুটি বাড়িয়েছে। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ও দোকানপাটও পুরোপুরি না খোলায় তারা এখন হয়তো আবার বাড়ি ছুটছে। তাছাড়া সরকার ঘোষণা করেছে ঈদে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করতে হবে, বাড়ি যাওয়া যাবে না। তাই হয়তো এসকল লোকজন আগেই ছুটছে বাড়ির উদ্দেশ্যে। যারা ঘাট এলাকা দিয়ে নদী পার হচ্ছে তাদের করোনার ভয় কারো মাঝেই ছিলোনা। এদের মধ্যে কারো করোনা থাকলে, তা কমিউনিটিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গগামী ছোট গাড়ির প্রচুর চাপ রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটস্থ এজিএম মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ১৩টি ফেরি চলাচল করলেও দক্ষিণবঙ্গমুখী গাড়ি ও যাত্রীর চাপে লোডিং-আনলোডিংয়ে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া করোনা ভয়ে বিআইডব্লিউটিসির স্টাফরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। তারা গাদাগাদির মধ্যে যেতে চাচ্ছে না। আমাদের একজন স্টাফ এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসায় অনেকেই তাদের পরিবার নিয়ে আগেই বাড়ি ফিরতে শুরু করছে। তবে এসব যাত্রীদের মধ্যে কারো করোনা ভাইরাস থাকলে তা মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটছে হাজারো মানুষ
আগের পোস্ট