নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় জামালদী টু হোসেন্দী বাজার এস ডি খান সড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়ক জুড়ে কেবলই ধুলোর রাজত্ব। বর্তমানে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে বেড়েছে ধুলোর পরিমাণও। প্রতিমুহূর্তে ওই এলাকার কর্মব্যস্ত মানুষ চলাচল করছে এই ধুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করেই। যার ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয়সহ পথচারীরা। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, জামালদী বাসস্ট্যান্ড থেকে সিটি গেইট পর্যন্ত সড়ক জুড়ে পুরোটাই ধুলোর রাজত্ব। সকাল থেকেই এ সড়কে চলাচলকারী কর্মব্যস্ত মানুষ মাস্ক মুখে দিয়ে বা নাকে রুমাল-কাপড় চেপে বের হচ্ছেন। এতে মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চরম অস্বস্তি। দেখা যায়, ধুলোর আস্তরণ পড়ে আশেপাশের গাছপালা বিবর্ণ হয়ে গেছে। ধুলোর কারণে আশেপাশের বাসা-বাড়ির বাসিন্দারা পড়েছেন মহাবিপাকে। দরজা-জানালা বন্ধ করেও মিলছে না ধুলো থেকে রেহাই। একইসঙ্গে রাস্তার পাশের দোকানিরাও পোহাচ্ছেন সীমাহীন দুর্ভোগ। এছাড়াও সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। যার ফলে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে সড়কটি।
জানা যায়, কিছুদিন আগে সাধারণ জনগণকে অনেক ভোগান্তি দিয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বেসরকারী একটি কোম্পানি সিটি গ্রুপকে ১৪ ফিট রাস্তার চার ভাগের ১ ভাগ খুঁড়ে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কাজ শেষ হলেও এখানো সেই খোঁড়াখুড়ি ধুলোময় রাস্তার বালু খেতে হয় এই পথ ব্যবহারকারী সাধারণ জনগণকে। কারণ, তিতাস কর্তৃপক্ষ গ্যাস সংযোগের নামে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি দিয়ে থেমে যায়নি এাখনো। বরং রাস্তা খোঁড়াখুড়ি করে আগের চেয়ে ভোগান্তির মাত্রা আরো তীব্র করে রেখে গেছে। গজারিয়া উপজেলার মধ্যে জামালদী টু হোসেন্দী এস ডি খান সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়া সত্ত্বেও তিতাস কর্তৃপক্ষ বেসরকারী কোম্পানিকে সুবিধা দিতে গিয়ে এ পথ ব্যবহারকারী সাধারণ জনগণকে খোঁড়াখুঁড়ি আর ধুলিময় সড়ক উপহার দিয়েছে। এখন ধুলিময় রাজ্য দিয়ে মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে অফিসে যাতায়াত করি। কি যে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় তা বলার ভাষা নেই। একদিন একটা শার্ট পরে বের হলে পরদিন ওই শার্ট গায়ে জড়ানো যায় না। তাসকিন ইভেন্ট মেনেজমেন্ট দোকানের মালিক মো. তাসকিন আহাম্মদ বলেন, হোসেন্দী ইউনিয়ন এলাকা গজারিয়া উপজেলার মধ্যে কলকারখানায় খ্যাত। এখানে সারা বাংলাদেশ থেকে মানুষের সমাগম হয়। ব্যস্ততম একটি রাস্তা এটি। এই ধুলোবালির রাস্তার কারণে সবাই অতিষ্ঠ। এর প্রতিকার কি? রাস্তা-ঘাটের মা-বাপ এলজিইডি কই তাদের তো একদিনও খোঁজ নিতেও দেখিনি। সিএনজি চালক বাবু বলেন, আমি জামালদী টু সোনালী মার্কেট সিএনজি চালাই। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে রাস্তার ধুলা খাইতে খাইতে আমি রাতে ঘুমাতে গেলে শ্বাসকষ্ট হয়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর অপরিণত বয়সে ৭০ লাখ মানুষ মারা যায় বায়ু দূষণের কারণে। এর কারণে আলঝেইমারস এবং স্মৃতিভ্রম ঝুঁকিও তৈরি হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বায়ু দূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এছাড়া ফুসফুসের (শ্বাসতন্ত্রের) নানা ধরনের জটিল সংক্রমণ রোগ হয়। যার মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, ক্রনিক অ্যাজমা, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ, ক্যানসার ইত্যাদি।