নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে জীবন যুদ্ধের গতি পরিবর্তন করে অনেকটা বাধ্য হয়েই হকার এখন ফল বিক্রেতার খাতায় নাম লিখিয়েছেন। সকলের কাছে হকার মোস্তফা নামে পরিচিত।
তিনি জানান, পত্রিকা এখন বিক্রি হচ্ছে না। বিভিন্ন অফিস, ব্যাংকসহ দোকানপাট বন্ধ। আর যে কয়টা বিক্রি করেছি তাও আবার বাকি। এদিকে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে ৪ জনের সংসারে অভাব অনটনের কারণে কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। কারো কাছে হাতও পাততে পারছিলাম না। তাই দুই কার্টুন আপেল ও এক কার্টুন খেজুর বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি। তবে খেজুরে কিছু লাভ হলেও আপেলে লোকসান হয়েছে ২০০ টাকা। এদিকে আবার বাসা ভাড়া দিতে হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। তার সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, তিনি বর্তমানে লতব্দী ইউনিয়নের চরকমলাপুর একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি শরিয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার চরখোরতলা গ্রামে। তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পত্রিকার হকার হিসেবে কাজ করে আসছেন। করোনার জন্য ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে পত্রিকা বিক্রি। অন্য জেলার হওয়ায় কেউ তাকে ত্রাণও দিচ্ছে না। যেখানে দিনে ৫০০ টাকা করে প্রতি মাসে তার আয় ১৫ হাজার টাকা থাকতো। সেখানে কিছুই থাকছে না এখন। তাই গত সোমবার সিরাজদিখান বাজারের থানা সংলগ্ন একটি মিষ্টির দোকানের সামনে অস্থায়ী ফলের দোকান নিয়ে বসে ফল বিক্রি করছেন হকার মোস্তফা। ফলের দোকানে লাভের পরিবর্তে লোকসান হয়েছে। তার মত এ উপজেলায় আরো ২ জন হকার রয়েছে। তারা এখন কিছু করছে না।
সাধারণ ছুটির কারণে পেশা পরিবর্তনের এই গল্প শুধু মোহাম্মদ মোস্তফার নয়। তার মতো স্বল্প আয়ের অনেকেই জীবিকার তাগিদে বেছে নিয়েছেন নতুন নতুন পথ। এখন তাদের কেউ রিকশাচালক, কেউ হয়েছেন সবজি বিক্রেতা, কেউ ফল বিক্রেতা, আবার কেউ মাছ বিক্রেতা।