নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ১৫ই আগস্ট, জেল হত্যা ও ২১ আগস্টের খুনিদের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব শূন্য করতে সংঘটিত এসব হত্যাকান্ডের কুশিলব ও ষড়যন্ত্রকারীদের দল বিএনপি হলো এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায়; গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় বিএনপি-জামাত অপশক্তিকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
গতকাল ২৪ আগস্ট বুধবার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা মহাকালী ইউনিয়নে নারী নেত্রী শহীদ আইভী রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগ সভাপতি মহাসীন মাখন, মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুস সালাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. গোলাম মাওলা তপন, সদর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি পিয়ার হোসেন, মিরকাদিম পৌর কৃষকলীগের সভাপতি প্যানেল মেয়র আওলাদ হোসেন প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ আগস্ট একটি নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের ভয়াল দিন। তৎকালীন বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের ষড়যন্ত্রে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা করে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। সেই বীভৎস বর্বরোচিত ঘটনার কথা স্মরণে আসলে দেশবাসীর হৃদয়, মন আজও শিহরিত হয়ে ওঠে। মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের দানবীয় উন্মত্ততায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শান্তি সমাবেশ রক্তাক্ত হয়েছিল। ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল সভ্যতা-মানবতা। ২১ আগস্টের বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে নারী নেত্রী আইভি রহমান ২০০৪ সালের ২৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ পর্যন্ত দেয়নি তৎকালীন বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকার।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট, ৩রা নভেম্বরের জেল হত্যাকান্ড এবং ২০০৪ সালের ২১ একুশে আগস্ট সংঘটিত গ্রেনেড হামলা একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশকে নেতৃত্ব শূন্য করতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তি ধারাবাহিকভাবে দেশবিরোধী, জাতিবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। ১৫ই আগস্ট, জেল হত্যা ও ২১ আগস্টের খুনিদের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব শূন্য করতে সংঘটিত এসব হত্যাকান্ডের কুশিলব ও ষড়যন্ত্রকারীদের দল বিএনপি হলো এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায়; গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় বিএনপি-জামাত অপশক্তিকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ১৫ই আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির ইতিহাসে এমন বর্বরোচিত হত্যাকান্ড ঘটেনি। গ্রেনেড মেরে একটি রাজনৈতিক শক্তির মূল নেতৃত্ব সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার এমন জিঘাংসামূলক রাজনীতির ঘটনা সমকালীন বিশ্বে আর ঘটেনি। কেউ কী কোনোদিন ভাবতে পেরেছে, এই দেশে একটি দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক শক্তিকে পেশাদার খুনিদের দিয়ে গ্রেনেড মেরে সমূলে বিনাশ করবে? মূলতঃ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্রীয় পাপ। আর পাপী ছিলেন তৎকালীন বিএনপি জোট সরকার। এই জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সরকারের নিয়ন্ত্রক তারেক জিয়া।