নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দীর্ঘ ৩৫ বছর মামলা চলার পর অবশেষে প্রকৃত মালিকগণকে তাদের মালিকানা ও অর্পিত সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এর ফলে নয়ানগর ও গোসাইর মৌজায় থাকায় ১.৭২ একর মালিকানা সম্পত্তি ও ৩.৯৪ একর অর্পিত সম্পত্তির মালিকানা বুঝে পেল প্রকৃত মালিকগণ। মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৬৭ সালে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে ৩.৯৪ একর জায়গা সরকার থেকে লিজ আনে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বালুচর গ্রামের আব্দুল মতিন গং। তবে প্রতিবেশী পরেশ চন্দ্র দাস, নরেশ চন্দ্র দাস গং প্রথম থেকেই জায়গাটি তাদের বলে দাবি করে আসছিল। পরবর্তীতে তারা অর্পিত সম্পত্তির বেশ কিছু অংশ দখল করার চেষ্টা করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সহিংসতা অবস্থা সৃষ্টি হলে পরেশ চন্দ্র দাসের ছেলে লক্ষণ চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ১৯৮৫ সালে মোঃ ফারুক মিন্টু রাঢ়ী গংদের বিরুদ্ধে উক্ত সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে একটি মামলা দায়ের করেন। তবে তাদের দলিলটি জাল প্রমাণিত হওয়ায় পরের বছর অর্থাৎ ১৯৮৬ সালে মামলাটি খারিজ করে দেয় বিজ্ঞ আদালত। ১৯৮৭ সালে লক্ষণ চন্দ্র দাস গং মামলাটির খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন আপিলেও পূর্বের আদেশ বহাল থাকে।
পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে লক্ষণ চন্দ্র দাস গং উক্ত সম্পত্তিতে তাদের ও কয়েকটি মুসলমান পরিবারের মালিকানা আছে বলে দাবি করেন। পাশাপাশি মোঃ ফারুক মিন্টু রাঢ়ী গংদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি ১.৭২ একর তাদের দাবি করে একটি মামলা দায়ের করেন। অসত্য তথ্য এবং জাল দলিল প্রমাণিত হওয়ায় ১৯৯৬ সালে এ মামলাটিও খারিজ করে দেয় বিজ্ঞ আদালত। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে তারা নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করেন সেখানেও ২০০৩ সালে তাদের আপেলটি খারিজ করে দেন বিজ্ঞ আদালত। পরবর্তীতে দীর্ঘ ১৭ বছর বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার পর অবশেষে মালিকগণ তাদের জমি বুঝে পেল।
গজারিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমাম রাজী টুলু জানান, দীর্ঘদিন মামলা চলার পর প্রকৃত মালিকগণের পক্ষে রায় দেয় বিজ্ঞ আদালত। বিজ্ঞ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদাদের নির্দেশে গতকাল সোমবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকৃত মালিকগণকে তাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জমি বুঝে পেয়ে সন্তোষ জানিয়েছেন মালিক পক্ষ। মোঃ ফারুক মিন্টু রাঢ়ী জানান, কিছুটা দীর্ঘসূত্রিতা হলেও অবশেষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও গজারিয়া উপজেলা প্রশাসনের কাছে তিনি ও তার পরিবার ঋণী।