ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুলকে নিয়ে বিব্রত চেয়ারম্যান ফোরাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদেশ থেকে অবৈধভাবে আনা নারায়ণগঞ্জে ৩৭ হাজার বোতল মদ উদ্ধারের ঘটনায় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ও শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আজিজুল ইসলাম ও তার ২ সন্তানসহ ১১ জনকে আসামী করে সোনারগাঁও থানায় মামলা করেছে র্যাব। তার ছোট ছেলে আহাদের বিরুদ্ধে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। র্যাবের অভিযানে সবচেয়ে এই বড় চালান আটকের পরপরই শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম তার বড় ছেলে আশিককে নিয়ে দুবাই পালিয়ে যায়। ছোট ছেলে আহাদ বিমানবন্দর এলাকা থেকে আটক হয়। শ্রীনগর উপজেলা জুড়ে বিষয়টি নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও সরব। এ কারণে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাদেরকে বিএনপির নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের তীর্যক মন্তব্য সহ্য করতে হচ্ছে। ঘটনাটি নিয়ে গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে আজিজুল ইসলামের এলাকা ষোলঘরে মিছিল হয়েছে। মিছিলকারীরা আজিজুল ইসলামকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবী জানান।
শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিনহাজ উদ্দিন তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, আজিজুল ইসলাম আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে অবৈধ টাকা ছড়িয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছিল। তার মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে, সে এখন বাংলাদেশের বড় গডফাদার। অবৈধ মাদক ব্যবসায়ী। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ক্ষুদ্র কর্মী হিসাবে জোর দাবী করছি তাকে বহিষ্কার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মামুন বলেন, আমি শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী হিসাবে লজ্জিত। যুগ্ম সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা খুবই বিব্রত। বিষয়টির সাথে দলীয় ইমেজ জড়িত। সে হুট করে এসে উপজেলা আওয়ামী লীগে উপদেষ্টার পদ নেয়। ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকও হয়েছেন। কিভাবে এই পদ পেয়েছেন তা খতিয়ে দেখা উচিৎ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পাটাভোগ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ডালু বলেন, বিষয়টি নিয়ে নানারকম কথা হচ্ছে। আমরা বাজারে যেতে পারছি না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সেলিম আহমেদ ভূইয়া বলেন, এখানে লুকানোর কিছু নাই। অমার চরমভাবে বিব্রত। জেলা আওয়ামী লীগ তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আজিজুলকে নিয়ে বিব্রত হচ্ছি। উপজেলার উপদেষ্টার বাইরে তার ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির একটি পদ আছে। তাই জেলা ও কেন্দ্র তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষের হাত ধরে ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টার পদ নেন আজিজুল। সুকুমার রঞ্জন ঘোষ অসুস্থ হয়ে এলাকায় আসেন না প্রায় ৪ বছর। এ কারণে আজিজুলের বিষয়ে তার কোন প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা মিলে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফোরাম গঠন করেন। আজিজুল ইসলাম সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক।
চেয়ারম্যান ফোরামের আহ্বায়ক রাঢ়ীখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক খান বারী বলেন, আজিজুলকে নিয়ে আমরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। আগামী সভায় তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।