গুয়াগাছিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ছাত্রলীগের তিন নেতাসহ ৮ জনকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের চরচাষী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ দাইয়ুম খাঁনের ছেলে জেলা ছাত্রলীগের গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ সজিব হোসেন খাঁন (৩০), উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ফয়সাল আলম খাঁন সেতু (২৭), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি কামরুল ইসলাম খাঁন (৩৬), একই এলাকার মোঃ আলাউদ্দিনের ছেলে মোঃ হাকিম (২৪), শাহাব উদ্দিনের ছেলে মাসুদ মিয়া (২০), আব্দুল খালেকের ছেলে শাকিল আহমেদ (২০), মোঃ ফিরোজ খাঁনের ছেলে গোলাম মোস্তফা (২৬), মোহাম্মদ আলীর ছেলে সৌরভ (২০), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে হৃদয় মিয়া (১৮)। আহতদের মধ্যে সজিব, সেতু ও কামরুল ইসলামের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতদের সূত্রে জানা যায়, গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের চরচাষী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সরকার বাড়ি সংলগ্ন সরকারি খাল ভরাটের কাজ করছিলেন গুয়াগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মোহাম্মদ আলী খোকন। এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কামরুল খান। তিনি অবৈধভাবে খাল ভরাটের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ডকে জানান। গজারিয়ার এসিল্যান্ড সরেজমিনে ঘটনাস্থলে এসে খাল ভরাটের কাজটি বন্ধ করে দেন। তখন থেকেই ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সঙ্গে এলাকার লোকজনের মতবিরোধ চলছিলো। সরকারি খাল ভরাটের খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইমাম আল রাজি (টুলু) উপস্থিত হয়ে ভরাট কাজে বাধা প্রদান করার পর ক্ষিপ্ত হয় ঐ ইউপি চেয়ারম্যান। সেই সূত্র ধরে গত শুক্রবার রাতে সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতাসহ ৮ জনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মামুন আল রশিদ জানান, এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মোহাম্মদ আলী খোকন বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ঘটনার দিন আমি একটা সালিশে ছিলাম। আমি এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না। তাছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ দাইয়ুম খাঁন আমার মামা। তার সাথে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে নাই আমার। মূল বিষয় হচ্ছে মেয়েলি একটি ব্যাপার নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় পাশের গ্রামের এক ছেলের সাথে। পরে তারা পাশের গ্রামের লোকজনদের বাড়ি গিয়ে ভাংচুর চালায়। ফেরার পথে ঐ গ্রামের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয় এবং হামলা চালায়। তখন দাইয়ুম খাঁনের ছেলেরা আহত হয়। এ ঘটনার আগে আমার চাচাত ভাই বাবুল ও আমার ভাতিজা ফারুককে পিটিয়ে আহত করে দাইয়ুম খাঁনের লোকজন।
অপরদিকে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ দাইয়ুম খাঁন অভিযোগ করে বলেন, হামলার ঘটনায় তার তিন ছেলেসহ ৮ জন আহত হয়েছেন। থানায় তার অভিযোগটি আগে না নিয়ে তাকে বসিয়ে রেখে বর্তমান চেয়ারম্যানকে ফোন করে আনিয়ে চেয়ারম্যানের অভিযোগটি প্রথমে নিয়েছেন। গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন মুঠোফোনে মুন্সীগঞ্জের কাগজকে জানান, উভয়পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তারা উভয়েই এ ঘটনায় উল্টাপাল্টা নাম দিয়ে অভিযোগ দিয়েছে। এসব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।