নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতিষ্ঠানটি মূলত নার্সিং সেবা দিয়ে থাকে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রসূতি নারী কিংবা অসুস্থ ব্যক্তিদের সেবা দেয়াই কাজ। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত ক্রিটিক্যাল পেশেন্টদের অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাবের সুযোগ নিয়ে বিকল্প ব্যবসায় নামে গুলশান-২ এলাকার মাইশা কেয়ার লিমিটেড নামক নার্সিংহোম প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে কোনো ধরনের অনুমোদন না নিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করে। প্রচার প্রচারণা-চালায় যে, তারা করোনায় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের আইসিইউ সেবা দিচ্ছেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার ভাড়া এবং বিক্রি করছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির এসব কোনো কিছুরই অনুমোদন নেই।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় গুলশান-২ এর ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসের পাশে মায়শা কেয়ার লিমিটেড নামক ওই নার্সিংহোম কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
অভিযানকালে অর্ধশত অনুমোদনহীন অক্সিজেন সিলিন্ডার জব্দ এবং বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রির দায়ে প্রতিষ্ঠানটির দুই কর্মকর্তাকে জেল জরিমানা দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
র্যাব-৩ এর সহযোগিতায় এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেকসহ তিন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
পলাশ বসু বলেন, মায়শা কেয়ার লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নার্সিং সেবা দেয়। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনায় প্রতিষ্ঠানটি প্রচারণা চালায় যে, তারা আইসিইউ পেশেন্টকে সেবা দেন, নিউরো পেশেন্টের সেবা দেন অর্থাৎ প্রতারণার সব ধরনের বিষয় তারা প্রচারণায় ব্যবহার করছেন।
তিনি বলেন, অভিযানকালে আমরা প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদনবিহীন অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত দেখতে পাই এবং শুধু তাই নয় জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি যে, তারা অবৈধভাবে ওই অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো প্রায় তিনগুণ দামে অনেকের কাছে বিক্রি করেছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু বলেন, ওই অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না থাকার কারণে এটা বোঝার কোনো উপায় নেই যে এগুলো আসলে কিসের জন্য ব্যবহারযোগ্য সিলিন্ডার! কারণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনও থাকতে পারে, যা কী আছে ক্রেতার জানা সম্ভব না।
সব কিছুর প্রমাণ ও দায় স্বীকারের ভিত্তিতে মায়শা কেয়ার লিমিটেড নামক নার্সিং প্রতিষ্ঠানটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. মহিবুল ইসলামকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয় আদালত।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার কাম অ্যাকাউনটেন্ড শাহাদাত হাবিবকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের বিভিন্ন ধারায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। নগদ চার লাখ টাকা পরিশোধ করায় তিনি মুক্তি পান।
তিনগুণ দামে অক্সিজেন সিলিন্ডার : মায়শার দুই কর্মকর্তার জেল
আগের পোস্ট