নিজস্ব প্রতিবেদক
অতি প্রয়োজন ছাড়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদে বাড়ি না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর স্বেগুনবাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সামনে ঈদুল আজহা, গণপরিবহন নিয়ে আমরা একটা সংকটের মধ্যে আছি। একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অপর দিকে বন্যা। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে সড়ক, রেল, আকাশ ও নৌ পথে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যতটুকু সম্ভব সঠিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে নৌ পথে ঈদ যাত্রাটাকে আমরা সুন্দর করতে চাই। “আমি যাত্রী সাধারণের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই, প্রয়োজন ছাড়া আমরা যেন এই যাত্রাটাকে পরিহার করি। কারণ বেঁচে থাকলে আমরা অনেক ঈদ উযাপনের সুযোগ পাব। কাজেই তাড়াহুড়া করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই যাত্রায় না যাওয়াটাই আমাদের জন্য মঙ্গলজনক।” এ সময় বাংলাদেশ থেকে বিদেশে গিয়ে অনেক সাংবাদিকই দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়েছে বলে দাবি করেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “আজকে দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমকর্মী তারা বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়ে দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়েজিত রেখেছে। দেশের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছে। “আমাদের কষ্ট লাগে যখন দেশের কথা বলতে গিয়ে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে অনেক সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন। এই অনুভূতিকেও যদি অনুধাবন করতো যে, আমার একজন সহকর্মী আমার একজন সহযোদ্ধা বাংলাদেশে এই পরিস্থিতির মধ্যে আছে, তাহলে অন্ততপক্ষে দেশ বিরোধী এই কথাবার্তাগুলো বলতো না।” করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলছে দাবি করে সরকারের এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অনেকেরই এই অগ্রগতি সহ্য হচ্ছে না। তাই তারা সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছে।” তিনি বলেন, “আজকে অনেকেই বলছেন বাংলাদেশের অর্থনীতি নাকি ধ্বংস হয়ে গেছে। তাহলে কিভাবে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জন্য এত কোটি টাকা অনুদান দিলেন। তাহলে কিভাবে এত বড় বাজেট পাস হলো? কিভাবে আমরা তিন মাস করোনাভাইরাসের মধ্যেও গত বাজেটের ৯০ ভাগ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি? কিভাবে পদ্মাসেতুসহ সরকার এত বড় বড় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন? এগুলো কিভাবে সম্ভব। বাংলাদেশের কোন জায়গায় বেতন না পেয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছে এমন কোন ঘটনা ঘটে নি।” “প্রায় একহাজার কোটি টাকার কার্যক্রম নৌ পরিবহনে চলমান। আমরা আরও ২৫শত কোটি টাকার ডিপিপি সংশোধন করার জন্য একনেকে পাঠিয়েছি। তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে গেল কিভাবে? “অথচ গতকালও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না। সাহেদ-সাবরিনা কর্মকান্ডে নাকি বিশ্বের কাছে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এতে নাকি আমাদের যে সকল ভাইয়েরা বিদেশে আছে তারা নাকি সংকটে পড়বে। বাংলাদেশে পঁচাত্তর সালে শিশুকে হত্যা করা হয়েছিল, গর্ভবতী মাকে হত্যা করা হয়েছিল। এই ধরনের মানুষের তখন কোথায় ছিল। খালিদ বলেন, বাংলাদেশের ইমেজ, যারা পঁচাত্তরের পনেরই আগস্টের পরে নষ্ট করা হয়েছিল, পরবর্তী ধারাবাহিকভাবে যারা জঙ্গিবাদ, শায়েখ আব্দুর রহমান, বাংলাভাই সৃষ্টি করেছে তারা এখন বলে আমাদের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের ইমেজ নষ্ট হবে না। কারণ, এখানে আছে পৃথিবীর অন্যতম ডায়নামিক নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। এটা আমার কথা নয়, সমগ্র পৃথিবীর কথা।” “যারা বাংলাদেশের এই সম্ভাবনা দেখে উন্নয়ন দেখে কষ্ট পান তারা এই সমস্ত কথা বানিয়ে বলছেন। কারণ তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশকে বিকলাঙ্গ করা। তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। আমরা যখন জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছি তখন তারা ব্যর্থ রাষ্ট্র উদযাপন করতে চাচ্ছে।” ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রয়াত সদস্যদের সম্মানে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রয়াত সদস্যদের পরিবারের মধ্যে অর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী। সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক হাবীবুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানি, কবির আহমেদ খান, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাত হোসেন সোহাগ।
অতি প্রয়োজন ছাড়া ঈদে বাড়ি না যাওয়ার আহ্বান খালিদের
আগের পোস্ট