শ্রীনগরে বন্যায় পানিবন্দি ৫২টি গ্রামের ৮ হাজার পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বন্যায় ৫২টি গ্রামের প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর মতো পদ্মা নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত থেকে প্রচন্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে বলে নদীর পানি প্রতিমূহুর্তে বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পানি নদীর দু’কুল উপচে বন্যার সৃষ্টি করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে এরই মধ্যে শ্রীনগর, ভাগ্যকুল, বাঘড়া, রাঢ়ীখাল, শ্যামসিদ্ধি ও কোলাপাড়া ইউনিয়নের ৫২টি গ্রামের ৭ হাজার ৭শত ৫৬টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নও বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বন্যার পানিতে গ্রামগুলোর অধিকাংশ কাঁচা ও পাকা সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। আর এসব সড়কের কোথাও হাঁটু পর্যন্ত, আবার কোথাও তার চেয়ে বেশী পানি রয়েছে। শত শত বাড়ি পানি ছুঁইছুঁই অবস্থা। আবার কোথাও কোথাও অনেকের ঘরবাড়ি তলিয়েও গেছে। কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি থেকে বাঁচতে কেউ কেউ নিজের বাড়িতে উঁচু মাচা করে, আবার কেউ নিকট আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় নিয়েছেন। কোলাপাড়া ইউনিয়নের নূরু ইসলাম বলেন, তার ঘরে পানি ওঠার কারণে সে পার্শ^বর্তী এক বাড়ির বিল্ডিংয়ের ছাদে ত্রিপাল দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। এছাড়া অনেকের ধান-পাট, মাছের ঘের, গরুর খামার, মুরগির ফার্মসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে। হাঁস-মুরগীসহ গবাদি পশু রাখা ও এদের খাদ্য নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। পানির প্রবল চাপে ঢাকা-দোহার সড়কের কয়েকটি স্থানে পানির প্রবল স্রোতে সড়কের ক্ষতিসহ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ঢাকা-দোহার সড়কের আল-আমিন বাজার নামক স্থানে সড়ক ভেঙ্গে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ঢাকা-দোহার সড়কের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি ওঠার কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ছোট ছোট যানবাহন। বন্যায় পানিবন্দি একাধিক ভুক্তভোগী জানায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে উপজেলা প্রশাসন কিছু সহযোগিতা করলেও তা ছিল খুবই অপ্রতুল। বন্যায় পানিবন্দিদের সহযোগিতা বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার বলেন, ৬টি ইউনিয়নের জন্য এ পর্যন্ত ১২টি আশ্রয়ণ প্রকল্প খোলা হয়েছে। এছাড়া ২০ মেট্রিকটন চাল ও ৫শত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। খুব শিঘ্রই আরো ১০ মেট্রিকটন চাল ও ২শত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার দেয়া হবে।