নিজস্ব প্রতিবেদক
আলু জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল। ইতিমধ্যে এ বছর গজারিয়ায় উৎসবের আমেজে শুরু হয়েছে আলু উত্তোলন। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের রসুলপুর, ইমামপুর, করিম খাঁ, হোগলাকান্দী, জষ্টিতলা, বাঘাইকান্দী, আন্ধারমানিক, কালিপুরা, ভবেরচর ইউনিয়নের শ্রীনগর, চরপাথালিয়া, পৈক্ষারপাড়, আনারপুরা, লক্ষ্মীপুর, টেঙ্গারচর ইউনিয়নের উত্তর শাহপুর, বৈদ্যারগাঁ, মিরপুর, টেঙ্গারচরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে আলু উত্তোলনে ব্যস্ত কৃষকেরা। আলু চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে ভাল ফলনের জন্য। দেখা যায়, মাঠ জুড়ে আলু উত্তোলনের বিশাল কর্মযজ্ঞ। কোন ক্ষেতের এক কোণে আলুর স্তর, কোন ক্ষেতে সারিবদ্ধ আলুর বস্তা, আবার কোন ক্ষেতের লাইনে লাইনে সদ্য তোলা আলুর সারি। এক ক্ষেতে আলু তোলার কাজে ব্যস্ত ছিল ২৫/৩০ জন শ্রমিক। এগিয়ে গিয়ে কথা বলতেই জানা গেল, এদের সবারই বাড়ি গাইবান্ধা। প্রতি বছরই আলু রোপণ ও উত্তোলনের সময় তারা গজারিয়া আসেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি বছরই উত্তরাঞ্চলের বিশেষ করে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর থেকে শ্রমিকরা এসে আলু রোপণ ও উত্তোলন করে থাকেন। পারিশ্রমিক কম হওয়ায় এ শ্রমিকদের গুরুত্ব দেন এ এলাকার আলু চাষীরা। মাঠেই কথা হয় ইমামপুর গ্রামের আলু চাষী পান্না ভূঁইয়ার সাথে। তিনি জানান, এবার আলুর ফলন ভালো কিন্তু বর্তমান ক্ষেতে যে দাম পাচ্ছে তা উৎপাদন খরচ উঠলেও লাভ থাকছে না। যেখানে প্রতি মণ আলুর উৎপাদন খরচ হয়েছে ৩৮০/৪০০ টাকা সেখানে বিক্রি করতে হচ্ছে ৪২০/৪৫০ টাকা। আরেক আলু চাষী আলম মিয়া জানান, গজারিয়ায় হিমাগারে ধারণ ক্ষমতা কম থাকায় অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে তা পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ সদর কিংবা টঙ্গীবাড়ীতে নিয়ে রাখতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ২,৪৫৫ (দুই হাজার চারশত পঞ্চান্ন) হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫,০০০ (পঁচাত্তর) হাজার মেট্রিক টন আলু। ইতিমধ্যে ১৬৬০ হেক্টর জমির আলু উত্তোলন করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৫২,১৬০ (বায়ান্ন হাজার একশত ষাট) মেট্রিকটন পূরণ হয়েছে। আরো জানা যায়, আবহাওয়া ভাল থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যেই আলু উত্তোলন শেষ হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. তৌফিক আহমেদ নূর জানান, এ বছর জমি থেকে পানি দেরিতে নামায় জমি উর্বর ছিল। তাই আলুর ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের টার্গেট পূর্ণ হবার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। উৎপাদিত আলু সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করি উপজেলা সংলগ্ন দু’টি কোল্ডস্টোরেজ লাল মিয়া ও মেঘনা হিমাগারে। এ বিষয়ে মেঘনা কোল্ডস্টোরেজ এর ইনচার্জ মোঃ রমজান আলী জানান, দু’টি কোল্ডস্টোরেজে সর্বমোট ১৩,৫০০ (তের বাজার পাঁচশত) মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা যায়। যা উপজেলায় উৎপাদিত আলু সংরক্ষণের জন্য অপ্রতুল।