নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের উত্তর রাঙামালিয়া কবরস্থান সংলগ্ন খাল দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেড অবাধে চলাচলের কারণে অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙনের সম্মুখীন হয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাসাধিক কালেরও অধিক সময় ধরে দিনরাত বালুবাহী সেসব বাল্কহেড বেপরোয়াভাবে চলাচলের কারণে আশপাশের বাড়িসমূহ ভাঙন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে মর্মে অভিযোগ স্থানীয়দের। এছাড়া উত্তর রাঙামালিয়া কবরস্থান থেকে চরবিশ্বনাথ ও কালারায়ের চর পর্যন্ত এ খালটি দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেড অবাধে চলাচলের কারণে খালটির বিভিন্ন স্থানে থাকা ৫টি ব্রীজের পিলার বাল্কহেডের ধাক্কায় ভাঙন ধরার অশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে এলেও দৃষ্টিগোচর হয়নি প্রশাসনের। বসতবাড়ি ও খালটির উপর অবস্থিত ব্রীজসমূহ রক্ষার্থে স্থানীয়রা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের উত্তর রাঙামালিয়া কবরস্থান সংলগ্ন খাল দিয়ে ঢুকে বাসাইল খাল হয়ে চরবিশ্বনাথ ও কালারায়ের চর পর্যন্ত খালটি দিয়ে কেয়াইন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি আবাসন প্রকল্পের জমিসহ ব্যক্তিগত বেশ কয়েকটি জমি ভরাটের কাজ করে চলেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের লোকজন। নিয়ম-নীতির কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে প্রায় মাসাধিক কালেরও অধিক সময় ধরে চলছে জমি ভরাটের অবৈধ এ কার্যক্রম। আকারে ছোট এ খালটি দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেড অবাধে চলাচলের কারণে খালটির আশপাশের অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙনের সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া খালটির বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ৫টি ব্রীজ বারবার অতিক্রম করে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলের ফলে ধাক্কা লেগে ব্রীজসমূহের ক্ষতি সাধন হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা বিদ্যমান। এদিকে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলের কারণে খালটির প্রবেশপথ উত্তর রাঙামালিয়া কবরস্থানের একপাশের মাটি ভাঙন ধরেছে মর্মে খবর পাওয়া গেছে। এতে ওই এলাকার লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে খালের আশপাশের বাড়ি ভাঙন এড়াতে এবং খালের উপর নির্মিত ব্রীজসমূহ ভাঙন হুমকি থেকে রক্ষা করতে সম্প্রতি বাসাইল বাজার সংলগ্ন বাসাইল ব্রীজের নিচে তিনটি বাল্কহেড আটক করে এলাকাবাসী। পরে ওই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে বাল্কহেড তিনটি ছাড়িয়ে নেয়। প্রভাবশালী ওই সিন্ডিকেটটির লোকজন স্থানীয় ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষতির কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে অবাধে বালুবাহী বাল্কহেড এনে জমি ভরাটের কাজ চালাচ্ছেন অনেকটা দাপটের সাথে। ভাঙনের সম্মুখীন হওয়া অর্ধশতাধিক বাড়ি ও সরকারি ব্রীজসমূহ রক্ষায় প্রভাবশালী ওই সিন্ডিকেটটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন বলেন, বাড়ীর পাশের খাল দিয়ে রাতদিন ২৪ ঘন্টাই বড় বড় বাল্কহেড অবাধে চলাচল করছে। এ কারণে আমাদের বাড়ীঘর ভাঙনের সম্মুখীন হচ্ছে। খালের উপর ব্রীজগুলোও বাল্কহেডের ধাক্কায় ভেঙে পড়তে পারে। আমরা তাদেরকে বলার পরও তারা থামেনাই। বাধ্য হয়ে আমরা আমাদের বাড়ি রক্ষার্থে কয়েকদিন আগে তিনটা বাল্কহেড আটক করি। পরে তারা ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে আবারও বালু আনা নেওয়ার কাজ করছে। আমরা অনেকটাই বেকায়দায় পড়েছি। এ ব্যাপারে বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম যুবরাজ জানান, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারাও লেখালেখি করেন। সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম জানান, আমরা এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।