নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারের ঘোষণা মোতাবেক আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দীর্ঘদিনের অভ্যাসের কারণে স্বাভাবিকভাবেই সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়া। আবার ক্লাসের ফাঁকে স্কুলের মাঠে ছোটাছুটি করার দুরন্ত দিনগুলো শুরু হবে। স্কুলগামী সন্তানের পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে মা-বাবার দৈনিক রুটিন। শিক্ষকরা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের সান্নিধ্য। সহপাঠীদের সঙ্গ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গ্রামাঞ্চলের ঘরবন্দি শিশুরা পাচ্ছে মুক্তির আনন্দ। করোনা মহামারীতে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফের বাজল ঘণ্টা। ফের ফিরেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য। বছরের প্রথম দিনের মতো সব শিক্ষার্থীকে বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে গজারিয়া ভবেরচর ওয়াজীর আলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভবেরচর ওয়াজীর আলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখে শিক্ষকদের মধ্যেও আনন্দ দেখা গেছে। দেড় বছর পর স্কুল খোলায় বাচ্চাদের আনন্দের শেষ নেই। অনেকদিন পর বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য এক প্রকার নতুন উদ্যম শুরু হয়েছে। সহপাঠীদের পেয়ে মহা খুশি। দীর্ঘ দেড় বছর বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাচ্চারা একেবারেই অলস হয়ে পড়েছিল। আমাদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিদ্যালয় খোলা রাখা হোক। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মূল ফটকে হাত ধোয়ার জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সাবান এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। ভবেরচর ওয়াজীর আলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আক্তার হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসার আগ্রহ দেখা গেছে অনেক। শিক্ষার্থীরাও অনেক খুশি। বৈদ্যারগাঁও হাজী কেরামত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজীম উদ্দিন ফরাজী ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, এটি অবশ্যই আনন্দের বিষয়। বিদ্যালয় খোলার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। যেসব শিক্ষার্থী আসেনি বা আসতে দেরি হচ্ছে তাদেরও ফোন দিয়ে খবর নিচ্ছি। বছরের প্রথম দিনের মতো আনন্দ উল্লাস চলছে। উপজেলার অনেক স্কুলে শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়েছে। এ আনন্দ যেন বিষাদ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছে শিক্ষকরা। আনন্দের পাশাপাশি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, করোনা সংক্রমণ যাতে বেড়ে না যায়, সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে সবরকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাস রুটিন অনুযায়ী পাঠদান করা হবে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার ছোবলে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায়। মে মাস থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা ও জুলাই মাস থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকা, দুর্বল ও ধীরগতির ইন্টারনেট এবং ইন্টারনেটের উচ্চমূল্যের কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষেই অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব হয়নি। এ কারণেও অনেকটা পিছিয়ে ছিল প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা।