নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে এক বৃদ্ধার জমি জোরপূর্বক দখল ও দখলে বাধা প্রদান করায় বৃদ্ধাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী সোহাগের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামে। এ বিষয়ে রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান ও শেখর নগর আন্তঃকেন্দ্র পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন।
জানা যায়, রাজানগর ইউনিয়নের তেঘরিয়া মৌজার আর এস ১২২ দাগের মোট ৪৭ শতাংশের মধ্যে ১১.৭৫ শতাংশ বাড়ির মালিক সাইজুদ্দিন, ৬.৬১ শতাংশের মালিক কাঞ্চন বিবি, ৬.৬০ শতাংশের মালিক ফিরোজা বেগম। এই বাড়িতে দীর্ঘদিন যাবৎ বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম (৭০) বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি একই গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে প্রভাবশালী সোহাগ গোপনে মৃত সাইজ উদ্দিনের স্ত্রীর কাছ থেকে জায়গাটি ক্রয় করে। পরবর্তীতে জোরপূর্বক বৃদ্ধা ফিরোজার বাড়িতে থাকা একটি টিনের ছাপড়া ঘড় ভেঙে দেয় এবং বৃদ্ধার বাড়িতেই সোহাগ নতুন করে ঘর নির্মাণ শুরু করে।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম বলেন, আমার জায়গায় মোবারকের ছেলে জোর করে ঘর তুলছে। আমি সেখানে বাঁধা প্রদান করতে গেলে ওরা আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় ও মারধর করে। আমরা গরিব বলে আমাদের কথা কেউ শুনতে চায় না, চেয়ারম্যানসহ সকলে ওদের পক্ষ নেয়।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি একজন গরিব অসহায় অটোচালক। আমার মা, ভাইদের নিয়ে বাড়িতে বসবাস করি। আমাদের জায়গা গোপনে আমার মামির কাছ থেকে সোহাগ কিনে নিয়ে গেছে। এখন আমাদের থাকার ঘরসহ অটো গাড়ি রাখার জায়গাটিও তারা দখল করে নিচ্ছে। আমি এ বিষয়ে চেয়ারম্যানসহ শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের কাছে গেলেও তারা আমার পক্ষে কোনো কথা বলে না। সোহাগ প্রভাবশালী ও অনেক টাকার মালিক বলে চেয়ারম্যান ও পুলিশ ওদের পক্ষ নেয়। শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রের এসআই অলিউর আমার অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা হয়েও সোহাগের বাড়িতে দাওয়াত খায়। এভাবে আমাদের জায়গা যদি পুলিশ ও চেয়ারম্যান তাদেরকে বুঝিয়ে দেয় আমরা এখন কোথায় যাব। গরিব বলে কি কোন বিচার পাব না?
অভিযুক্ত সোহাগ বলেন, আমি জায়গাটি ক্রয় করেছি। এখন সেখানে ঘর তুলতে গেলে তোফাজ্জল ও তার মা বাঁধা প্রদান করছে। মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কাউকে কোন মারধর করিনাই। তারাই শুধু শুধু এসে গালিগালাজ করেছে।
শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রের এসআই অলিউল বলেন, তাদের দীর্ঘদিনের পুরনো জমিসংক্রান্ত বিরোধ। আমার আগে কয়েকজনের কাছে তাদের এই বিষয়ে অভিযোগ ছিল। মারামারির বিষয়ে জানতে পেরেছি। তবে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে করেনি। জমিসংক্রান্ত বিষয়ে আমি তাকে পরামর্শ দিয়েছে আদালত থেকে একটি ১৪৫ ধারার মামলা করে নিয়ে আসার জন্য।
রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বলেন, সেদিন বিভিন্ন এলাকার সালিশের উপস্থিতিতে জমির ভাগ করা হয়। আমি সেখানে ২ মিনিটের মত ছিলাম। পক্ষপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো সেখানে দীর্ঘসময় ছিলাম না, পক্ষপাত করব কি করে? আগামী শুক্রবার পুনরায় উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে একটি তারিখ করে তাদের জায়গা বুঝিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করব।