নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত যুবককে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজা বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তি বিএনপির কর্মী নাকি পথচারী সেটি এখনও তদন্তাধীন। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
এদিন সকালে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দুই জনের মৃত্যু হয়। পুলিশের দাবি, অনুমতি না নিয়ে মিছিল করায় বাধা দেওয়ায় পুলিশের ওপর চড়াও হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর কথা বলার সময় পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়, নিহত যুবকের নাম শাওন।
এ প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, যে ছেলেটি মারা গেছে, সে সেখানকার একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ভাতিজা। নিহত ব্যক্তি বিএনপির কর্মী নাকি পথচারী সেটি এখনও তদন্তাধীন। আমি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। যে-ই হোক, মানুষ তো মারা গেল- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই মানুষ মারা গেছে। আপনারা জানেন বিএনপি তো মানুষ মারার রাজনীতিটাই করে। তারা ২০১৪ ও ২০১৫ সালে মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সারাদেশে গন্ডগোল করার পরিকল্পনা করে নানা কর্মসূচি সাজিয়েছে। সেই কারণে সারাদেশে তারা পুলিশের ওপর হামলা করছে। পথচারীদের ওপর হামলা করছে। মানুষের সম্পত্তির ওপর হামলা করছে। অর্থাৎ ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে যে কাজগুলো করেছিল, সেটির নতুন সংস্ককরণ তারা শুরু করেছে দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য।
তিনি বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে পুলিশ, জেলা প্রশাসন কিংবা সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়া বিএনপি রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করছিল। পুলিশ তাদের রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ না করে দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ করার জন্য বলেছিল। সেটি তারা না শুনে রাস্তা বন্ধ করে দেয় এবং পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশের ওপর হামলা করে।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে সেখানে টিআর গ্যাস ছুঁড়েছে এবং লাঠিচার্জ করেছে। এভাবেই সেখানে ভ্যান্ডালিজম (ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম) করা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) গন্ডগোল করে সারাদেশে আরও লাশ সৃষ্টি করতে চায়। বিএনপি পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিরতা তৈরি করার অপচেষ্টা হিসেবে এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে।
জ্বালানি তেলের দাম কমানো নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে আবার ঊর্ধ্বগতি। যখন বাংলাদেশে তেলের দাম সমন্বয় করে বাড়ানো হয়েছিল, তখন বিশ্ব বাজারে তেলের যে দাম ছিল এখন কিন্তু দাম তার চেয়ে আরও বেড়ে গেছে। এরপরও প্রধানমন্ত্রী জনগণের কথা চিন্তা করে লিটারে ৫ টাকা করে বিভিন্ন ধরনের তেলের দাম কমিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাস ভাড়াও কিছুটা কমেছে। কিন্তু গতকালও দেখলাম এটা নিয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সমালোচনা করেছেন। বাড়ালেও দোষ, কমালেও দোষ। তাহলে কী করলে ওরা প্রশংসা করতে পারবে, আমি জানি না। সবকিছুতে সমালোচনা করার যে বাতিক সেখান থেকেই এ সমালোচনা। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলে দেশেও জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হবে।
নারায়ণগঞ্জে নিহত যুবক আ.লীগ নেতার ভাতিজা: তথ্যমন্ত্রী
আগের পোস্ট