নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বর্তমান সরকার পুলিশের উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বুধবার (১ মার্চ) রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে মোট ২৯১ জন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। তার মধ্যে ১২১ জন কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের ও শোক-সম্ভ্রান্ত পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। পুলিশ সদস্য সবসময় আন্তরিক, কর্তব্যনিষ্ঠ ও দেশের জন্য কাজ করেন। কাজ সমাধান করতে তারা পিছপা হন না, তাদের জীবন গেলেও তারা তাদের কর্তব্যের কথা ভুলেন না। তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রইলো।
তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনমন স্থির রাখা পুলিশ বাহিনীর অন্যতম কাজ। জান-মাল রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সর্বদা সচেষ্ট নিবেদিত থাকেন।
করোনাকালে পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন আমরা দেখেছি কর্তব্যবোধ। সেসময় হাসপাতালে নিকটাত্মীয়ের মরদেহ ফেলে যেতে দেখেছি স্বজনদের, সেখানে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা তার শেষ কাজটুকু করেছে পরম মমতা নিয়ে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেই পুলিশ চেয়েছিলেন, আজকের সেই পুলিশ জনগণের পুলিশ হয়েছে। বাংলাদেশের সমস্ত কাজে তারা ভূমিকা রাখছেন। সবকিছু ত্যাগের পরেও দায়িত্বে থাকেন। সেজন্যই আমরা দেশকে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমান সরকার পুলিশের উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
অনুদানের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চাকরিরত অবস্থায় নিহত পুলিশের পরিবারের কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে এককালীন আর্থিক অনুদানের ৫ লাখ টাকার প্রজ্ঞাপন বাতিল করে ৮ লাখ টাকা করেছে। ২০২০ সালে ১ অক্টোবর এই অনুদানের পরিমাণ ৮ লাখ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও চাকরিরত অবস্থায় স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে অবসরে গেলে সাহায্যের পরিমাণ ৪ লাখ টাকা করা হয়েছে। ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামাত-শিবির, হেফাজত ইসলাম ও দুর্বৃত্তের হামলায় কর্তব্যরত অবস্থায় বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এককালীন ৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে পুলিশ সদস্যদের আজীবন রেশন সুবিধা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল থাকা ও জননিরপত্ত নিশ্চিত করা একান্ত অপরিহার্য। সরকারের প্রকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে অন্যতম নিয়মক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। এই লক্ষ্য অর্জনে পুলিশের সব সদস্যকে সততা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, দায়িত্বরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যের রক্ত ও আত্মত্যাগ আমাদের ভীত করে না। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের উজ্জীবিত ও উৎসাহিত করে আরও পেশাদারিত্ব, সাহসিকতার সঙ্গে দেশের মানুষের সেবা করার। যেসব পুলিশ সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন তাদের পাশে সবসময় রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। আগামী দিনেও থাকবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান প্রমুখ।