নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। নির্বাচন বানচালে বিএনপি-জামাত অশুভ জোট যে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় ১৪ দল তা প্রতিহত করবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, জাতীয় পার্টির-জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, বিএনপি-জামাত দেশবিরোধী অপশক্তি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ষড়যন্ত্রের পথে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে বিদেশি প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। একদিকে তারা চিরাচরিতভাবে প্রতিদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে, টকশোতে এবং বক্তৃতা ও বিবৃতিতে সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতারভাবে মিথ্যাচার, অপপ্রচার করছে। অন্যদিকে বিভিন্ন দূতাবাসে বাক-স্বাধীনতা নেই, রাজনীতি করার সুযোগ নেই ইত্যাদি মিথ্যা অভিযোগে সরকারকে অভিযুক্ত করছে। এই দুই মুখো সাপই লাগাতারভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রে বীষ ঢেলে আসছে। ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, বর্জন ও বিভক্ত সৃষ্টির মধ্য দিয়ে এদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে আসছে। তাদের আদর্শ ইতিহাসের নিষ্ঠুর স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান বন্দুকের নলের মুখে গণতন্ত্রকে বুটের তলায় পিষ্ঠ করে অবৈধভাবে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করেছিল। নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে জোরপূর্বক ক্ষমতার মসনদ দখল করেছিল। শুধু ক্ষমতাই দখল করেনি, ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে একই সাথে সেনা প্রধান, সামরিক আইন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতি দখল করে রেখেছিল এবং সেনা প্রধান ও প্রধান সামরিক কর্মকর্তা পদে থেকেই হ্যাঁ/না ভোটের প্রহসন ও তথাকথিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করেছিল। একজন সেনাপ্রধান পদে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল এবং ভোট ডাকাতি করে রাষ্ট্রক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। বছরের পর বছর ধরে কারফিউ দিয়ে দুঃশাসন চালিয়েছিল। একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধী, পাকিস্তানপন্থী রাজনীতিক ও ধান্দাবাজদের নিয়ে বিএনপি নামক স্বৈরাচারী ভাবাদর্শের রাজনৈতিক দল গঠন করেছিল। সেই কলঙ্কিত ইতিহাস এদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ ভুলে যায়নি। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দল ফ্রিডম পার্টিকে নিয়ে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করেছিল, বঙ্গবন্ধুর এক খুনিকে বিরোধী দলের আসনে বসিয়েছিল। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল, মামলা-হামলা, অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। এমনকি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। আজ সেই বিএনপি নেতারা গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না করে। তাদের এই মায়াকান্নায় দেশের মানুষ কান দেয় না। তাই তারা বিদেশী প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। বাংলাদেশের মানুষের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির ধারাকে ব্যাহত করতে পাঁয়তারা চালায়। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে এদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদেরকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাতে হবে। নির্বাচন বানচালের যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।