নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মার শাখা নদীতে একটি বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ট্রলার ডুবির ঘটনায় নারী শিশুসহ এ পর্যন্ত আটজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত পাঁচ জন। শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার তালতলা-ডহুরী খালের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের রসকাঠি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। লাশ উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে একই পরিবারের চারজনসহ সাতজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সিরাজদিখানের লতব্দি ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের উদ্ধার হওয়া জাহাঙ্গীরের স্ত্রী হ্যাপি আক্তার (২৮), ছেলে সাকিব (৮), সাজিবুল (৪) ও জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর ছোট বোন পপি আক্তার (২৩)। অন্যরা হচ্ছেন- ফারিহান (১০) মোকশেদা (৪২) ও রাকিব (১২)। অপর একজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লৌহজং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা কায়েস আহম্মেদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি স্থানীয় লোকজন চারজনের লাশ উদ্ধার করেছেন। পরে তারা গিয়ে আরও চারজনের লাশ উদ্ধার করেন। স্থানীয়রা জানান, শনিবার দুপুরের পর সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের নারী-শিশুসহ ৪৭ জন ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি উচ্চশব্দে গান বাজাতে বাজাতে তালতলা-ডহুরী খাল দিয়ে লতব্দির দিকে যাচ্ছিল। এসময় বিপরীত দিক থেকে একটি বাল্কহেড বালু আনতে পদ্মা নদীর দিকে যাচ্ছিল। রাত ৮টার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে বাল্কহেডটি ট্রলারকে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এসময় ট্রলারের অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে উঠলেও ১৩ জন পানিতে তলিয়ে যান। তাদের মধ্যে আটজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বাকিরা এখনও নিখোঁজ। স্থানীয় আরিফ হালদার জানান, সন্ধ্যার পর মাওয়া থেকে আসা একটি পিকনিকের ট্রলারকে বিপরীত থেকে আসা একটি বাল্কহেড ধাক্কা দিলে ট্রলারটি ডুবে যায়। পরে এলাকাবাসী ডুবে যাওয়া ট্রলারের কিছু লোকজনকে জীবিত উদ্ধার করে। চারজনের লাশ উদ্ধার করে। স্থানীয় বাসিন্দা ওমর আলী জানান, ঘটনার পরপর এলাকাবাসী বাল্কহেডেটি জব্দ করে। তবে চালক পালিয়ে যান। মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফজাল খান জানান, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এছাড়া নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ঘাতক বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।