নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের খুনিগোষ্ঠীর রাজনৈতিক দল ও খুনিদের উত্তরসূরীদের রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে হবে। দেশে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়েছিল এবং খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবসের মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আধারা ইউনিয়নের ৩টি স্থানে গণভোজ, খাবার বিতরণ, আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আধারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহাসীনা হক কল্পনা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী হোসেন সরকার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মজিবুর রহমান, বিল্লাল, ইসলাম হোসেন সম্রাট, কবির মেম্বার, পৌর কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, সদর উপজেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম সোহাগ প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে মানবতার দুশমন প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকদের হাতে আমাদের মহান পথ প্রদর্শক, বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, সমকালীন বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা, বিশ্বের লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের পথিকৃৎ, মুক্তিকামী মানুষের অকৃত্রিম সুহৃদ, সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ উপনিবেশবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ ও বর্ণ বৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াকু বীরসেনানী, জোট-নিরপেক্ষ তৃতীয় বিশ্বের অনন্য প্রবক্তা নিরস্ত্রীকরণে বিশ্বাসী শান্তির দূত, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা, আবহমান বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ, আমাদের অন্তহীন প্রেরণার উৎস, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর খুনিচক্র বাঙালি জাতির ললাটে এক বিচারহীনতার সংস্কৃতি লেপন করে। ইতিহাসের ঘৃণিত কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে খুনি মোশতাক ও জিয়াউর রহমান চক্র। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের যাতে বিচারের সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে অন্যতম স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে উক্ত অধ্যাদেশটি সংসদে অনুমোদনক্রমে আইনে পরিণত করা হয়।
তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যিনি একটি স্বাধীন দেশ- একটি সার্বভৌম ভূ-খন্ড, একটি মানচিত্র, একটি পতাকা উপহার দিলেন জাতির সেই মহান স্থপতির খুনিদের বিচারের পথকে পর্যন্ত রুদ্ধ করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ অবুঝ শিশু শেখ রাসেল, আত্মীয় সুকান্ত বাবু এবং অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ আরজু মনি, স্ত্রী বেগম মুজিবসহ ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার করা যাবে না? এটা কোনো নরক রাজ্যের উপাখ্যান নয়। এটা এই বাংলাদেশে কিছু নরকের কীট, নরপশু বেইমান জাতিদ্রোহী কর্তৃক সংঘটিত ঘটনা। জাতি হিসেবে আমাদের ললাটে কলঙ্কের কালিমা এঁকে দিয়ে গেছে সেই ঘাতক নরপশুরা। এমনকি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের ন্যায় কালো আইনও আমাদের বুকের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর যেন বাঙালি জাতিকে সেই কালো আইনের প্রবক্তা, বঙ্গবন্ধুর খুনি, জাতিদ্রোহী, দেশদ্রোহী, মানবতা ও আইনের শত্রুদের কবলে পড়তে না হয়। তাদের লালনকারী বিএনপি-জামাত অশুভ শক্তি যেন আর রাজনীতিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে তা প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক নাগরিককে খেয়াল রাখতে হবে। এই অপশক্তির চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করার পর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারা প্রবর্তনের পথে এগিয়ে নিতে হবে আগামী প্রজন্মকে।