নিজস্ব প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আত্মস্বীকৃত খুনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির কর্তৃক খারিজ করা প্রাণভিক্ষার কাগজ কারাগারের পৌঁছালে যেকোনো সময়ে ফাঁসি করা হবে বলে জানিয়েছে কারাগার কর্তৃপক্ষ। তবে পবিত্র শবেবরাতের জন্য আজ রাতে ফাঁসি কার্যকর নাও করতে পারে কারাগার। সেক্ষেত্রে আগামীকাল ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে।
কারাগারের একটি সূত্র এসব তথ্য দিয়েছেন। সূত্রটি জানিয়েছে, পবিত্র শবে বরাতের কারণে আজ বৃহস্পতিবার রাতে মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে না। তবে পরবর্তীতে যেকোনো সময়ে তার ফাঁসি কার্যকর করা যাবে পারে।
এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন আবদুল মাজেদ। তার আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যায়। পরে ওইদিন রাতেই তার প্রাণভিক্ষার আবেদনও খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি।
কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন বলেন, মাজেদের প্রাণভিক্ষা খারিজের কাগজপত্র এখনো আমাদের কাছে আসেনি। ওই প্রাণ ভিক্ষার খারিজের কাগজ আমাদের কাছে আসলে যেকোন সময়ে তার ফাঁসি কার্যকর করা যেতে পারে।
ফাঁসি কার্যকরের প্রস্ততি রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া আছে।
কারাবিধিতে শবে বরাতের কারণে ফাঁসি কার্যকর করা না করার বিষয়ে কিছু লেখা আছে কিনা জানতে চাইলে এই কারা কর্মকর্তা বলেন, ‘না। পবিত্র শবেবরাতের কারণে ফাঁসি কার্যকর করা যাবে না কারাবিধিতে এমন কিছুই বলা নেই।’
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এই খুনির বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হেলাল চৌধুরী।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল বেলা সোয়া একটায় কারা কর্তৃপক্ষ আসামিকে আদালতে হাজির করে। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটররা আসামি গ্রেপ্তার দেখানোসহ আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামি আব্দুল মাজেদকে গ্রেপ্তারসহ মৃত্যু পরোয়ানার আবেদন মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে যাওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর মধ্যে আসামিকে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে অবহিত করা হবে, পাশাপাশি জেলা প্রশাসককে অবহিত করবে। আবদুল মাজেদকে গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর আলোচিত এই খুনি ২৩ বছর ধরে কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। তিনি গত ১৬ মার্চ ঢাকায় ফেরেন।
আবুদল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ খুনি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী। তারা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা।