করোনা ভাইরাস দাবিয়ে রাখতে পারেনি পদ্মা সেতুর কাজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
পদ্মা সেতুর ২৮ তম স্প্যান বসেছে। এ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান হলো ৪২০০ মিটার। গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় ‘৪বি’ নম্বর স্প্যানটি মাওয়ার সীমান্তবর্তী ও সেতুর মাঝামাঝি ২০ ও ২১ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয়েছে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত শুক্রবার সকালের ‘৪বি’ নম্বর স্প্যানটি মাওয়ার কুমারভোগ ইয়ার্ড থেকে স্প্যান নিয়ে রওনা হয় ভ্রাম্যমাণ ক্রেনবাহী জাহাজ ‘তিয়ান ই’। প্রায় ৩২ শ’ টন ওজনের ১৫০ মিটার দীর্ঘ এই স্প্যান তুলে নিয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নোঙ্গর করে। পরে এটি পজিশনিংসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে এটি খুঁটির উপর তুলে দেয়া হয়। সেখানে লিফটিং ফ্রেম (স্প্যানকে ঝুলন্ত রাখার যন্ত্র) সেট করা ছিল আগেই। খুঁটির উপর সেট করা ছিল বেয়ারিং। তিনি জানান, এই স্প্যান বসে যাওয়ায় জাজিরার অংশে আর মাত্র ২টি স্প্যান বাকী থাকলো। ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটিতে ‘৫এ’ ও ‘৫বি’ নম্বর স্প্যান বাকী মাত্র। এই অংশটিতে ফেরি চলাচলের চ্যানেল থাকায় বিলম্ব হয়। সর্বশেষ ২৬ নম্বর খুঁটি সম্পন্ন হওয়ায় এখানেও শীঘ্রই স্প্যান বসবে বলে তিনি জানান। করোনার মধ্যেই গত ২৮ মার্চ সেতুর ২৭ তম স্প্যান খুঁটিতে উঠেছে। এরপর ৩১ মার্চ ২৬ নম্বর খুঁটি বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুর সব খুঁটি সম্পন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া চলতি মাসেই ২৯ তম স্প্যানও বসে যাওয়ার কথা রয়েছে। চলতি মাসের ৩০ তারিখ টার্গেট করা হয়েছে। এখনও দেশী বিদেশী প্রায় আড়াই হাজার কর্মী কাজ করছে প্রকল্পটিতে। এছাড়া সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩৯টি স্প্যান এখন মাওয়ায়। যার ২৭টি স্প্যান খুঁটির ওপর বসে গেছে। অপর ২টি স্প্যান চীন থেকে চলতি ২০ এপ্রিল রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। ২৮ তম স্প্যান বসে যাওয়ার পর এখন বাকী থাকছে মাত্র ১৩টি স্প্যান। সংশোধিত সিডিউল অনুযায়ী আগামী নভেম্বরের মধ্যে সব স্প্যান বসে যাওয়ার কথা আছে। এদিকে দু’প্রান্তের সংযোগ সেতুর কাজও এগিয়ে চলছে। মাওয়া প্রান্তে এরই মধ্যে ১১টি সুপার টি গার্ডার স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া প্রান্তে এই সুপার টি গার্ডার বসবে ২০৪টি। ওদিকে জাজিরাপ্রান্তে ২৩৪টি সুপার টি গার্ডারের ১১১টি স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, এখানকার দেশী বিদেশী কর্মীরা অনেকটাই নিরাপদ। তাই এখানে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের কাউকেই এখানে এখন প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ভেতরে করোনার স্বাস্থ্যবিধি সবই মেনে চলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন’।