নিজস্ব প্রতিবেদক
‘মুক্তারপুর ব্রীজ থেকে নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণ’ কর্মসূচি গত ৮ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অশেষ ধন্যবাদ। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কর্মবীর ওবায়দুল কাদের এমপিকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একইসাথে সড়ক ও সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্ট সকল প্রকৌশলী-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ইতিহাস ঐতিহ্যের পাদপীঠ মুন্সীগঞ্জ তথা বিক্রমপুর অঞ্চলটি রাজধানী ঢাকার অত্যন্ত নিকটবর্তী এলাকা হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন থেকে এ এলাকাটি ছিল উন্নয়ন সুবিধাবঞ্চিত। এ এলাকার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাও ছিল অনেকটাই পশ্চাৎপদ এবং সমস্যা-সঙ্কুল। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময়কালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী কর্মবীর ওবায়দুল কাদের এমপি’র নিরবচ্ছিন্ন কর্মোদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় মুন্সীগঞ্জ এলাকার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এ এলাকার রাস্তাঘাট-ব্রীজ-কালর্ভাট যেখানে যা দরকার তা নির্মাণ করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন প্রত্যন্ত চরাঞ্চলেও শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। মুন্সীগঞ্জ জেলার একদিকে দেশবাসীর আত্মমর্যাদার স্মারক স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে এবং পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে দেশের প্রথম এক্সপ্রেস-ওয়ে ‘ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস-ওয়ে’ নির্মিত হচ্ছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার এতো উন্নয়নের পরও মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের সাথে একমাত্র সংযোগ সড়ক মুক্তারপুর থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত রাস্তাটি এখনও নানা সমস্যায় জর্জরিত। মুন্সীগঞ্জ জেলা সদর থেকে ঢাকার সাথে যোগাযোগের একমাত্র সংযোগ সড়ক মুক্তারপুর থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত রাস্তাটি অত্যন্ত সংকীর্ণ হওয়ায় এই সড়কে যাতায়াত ছিল খুবই কষ্টদায়ক। এ সড়কটি খুবই সংকীর্ণ এবং আঁকাবাঁকা। অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে ৫টি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ও আলু সংরক্ষণের জন্য কোল্ডস্টোরেজ থাকায় প্রচুর ভারি যানবাহন চলাচল করে। ফলে প্রায়শই এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়কের প্রশস্ততা গড়ে মাত্র ছয় মিটার! কিন্তু সড়কটিতে বিদ্যমান অ্যানুয়েল এভারেজ ডেইলি ট্রাফিক (এএডিট) তথা প্রতিনিয়ত যান চলাচলের পরিমাণ ১৭ হাজার ৯১০টি। যে কারণে আমি এই সড়কে যাতায়াতের সময় এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রতিনিয়ত বিচলিত হয়ে পড়ি এবং গভীর মনোকষ্ট অনুভব করি। আজ সে কষ্ট লাঘবের পথ উন্মোচিত হয়েছে। এই প্রকল্পটির প্রয়োজনীয়তা ট্রাফিক পূর্বাভাসের দিকে খেয়াল করলেই সকলে সহজেই অনুভব করতে পারবেন। ট্রাফিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এই সড়কে যানবাহনের সংখ্যা হবে দৈনিক ২৩ হাজার ৯২০টি এবং ২০২৮ সালে দৈনিক ৩০ হাজার ৫৬০টি, ২০৩৩ সালে দৈনিক ৩৯ হাজারটি এবং ২০৪৩ সালে দৈনিক ৬৩ হাজার ৫৮০টি। একবার চিন্তা করুন তো, এখন যানজট শেষ করে হলেও গন্তব্যে পৌঁছানো যায়Ñ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত না হলে ভবিষ্যতে এই এলাকার মানুষের কী পরিমাণ দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হবে? প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহনগুলো ঢাকা শহরে প্রবেশ করতে হবে না। এসব যানবাহন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচল করতে পারবে। এছাড়া মুন্সীগঞ্জ জেলার সঙ্গে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের অধিক উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ভ্রমণ সময় ৬২ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমবে, যানবাহনের গতিসীমা ৪ দশমিক ৪৫ গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং যানবাহনের বিলম্ব সময় ৭৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমবে, ইতোমধ্যে যা সমীক্ষায় প্রতীয়মান হয়েছে। পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী সংগ্রামী জননেতা ওবায়দুল কাদের এমপির আন্তরিক প্রচেষ্টায় মুন্সীগঞ্জের মানুষের প্রাণীর দাবী স্বপ্নের এই প্রকল্পটি অনুমোদিত হওয়ায় প্রিয় নেতাকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
অভিনন্দন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কর্মবীর ওবায়দুল কাদের এমপি – অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস
আগের পোস্ট