নিজস্ব প্রতিবেদক
মহামারি করোনায় ঈদুল ফিতর বেশিরভাগেরই কেটেছে আতঙ্কে, ঘরে থেকে। অনেকেরই কেনাকাটা করা সম্ভব হয়নি। দেয়া সম্ভব হয়নি আত্মীয়-স্বজনদের উপহার। এমনকি অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়নি পরিবারের জন্যও কেনাকাটা করার। এরই মধ্যে আগামী ১ আগস্ট, বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঈদুল আজহা। করোনা থাকলেও এবার সেই আতঙ্ক কিছুটা কমেছে। স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জীবন-জীবিকা। যারা ঈদুল ফিতরে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে পারেননি, এবার ঈদুল আজহায় অনেকেই করছেন। এতে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শপিংমলগুলোতে জামা-কাপড়ের বিক্রি বেশ বেড়েছে। রোববার (২৬ জুলাই) পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের জামা-কাপড়ের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে এসব জানা গেছে। তারা বলছেন, গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার বসুন্ধরা সিটিতে বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। অনেকে হয়তো ঈদের আগে আর ছুটি পাবেন না। অনেকেই রাজধানী ছাড়ছেন, কেনাকাটার সুযোগ পাবেন না। এসব কারণে এই তিনদিন বেশ বিক্রি হয়েছে। দোকানিরা আশা করছেন, ঈদের আগ পর্যন্ত তাদের এই বিক্রি অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া বসুন্ধরা সিটিতে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় ক্রেতারা এখানে আসতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। সে কারণে অন্যান্য শপিংমলের তুলনায় এখানে বিক্রি একটু বেশি। এ বিষয়ে পাঞ্জাবির স্টল লুবনানের শপ ম্যানেজার রিয়াজ হোসেন রাজু বলেন, ‘বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি – গত এই তিনদিন আমাদের ভালো বিক্রি হয়েছে। রোজার ঈদে করোনার কারণে বেশিরভাগ মানুষই কেনাকাটা করতে পারেনি। উপহার দেয়া, পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে পারেনি। সেসব কারণে এবার কেনাকাটা একটু বেড়েছে। অনেকে ঈদের আগে আর ছুটি পাবেন না। আবার অনেকে গ্রামে চলে যাবেন। এর প্রভাব পড়েছে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের বিক্রিতে। তিনি আরও বলেন, ‘সিম্পল ও হালকা কাজের পাঞ্জাবিগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে এবার। কটনের এসব কাপড়গুলোই বেশি পছন্দ ক্রেতাদের। তাছাড়া গর্জিয়াস পাঞ্জাবিগুলোও ভালো বিক্রি হচ্ছে। বিয়ে, কাবিনসহ পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলোতে এই গর্জিয়াস পাঞ্জাবিগুলো বেশি ব্যবহার হচ্ছে।’
শার্টের দোকান ক্যাট আইয়ের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘বসুন্ধরা সিটিতে করোনার স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে। ক্রেতারা আশ্বস্তও হচ্ছে। তাই অন্যান্য শপিংমল বা দোকানপাটের তুলনায় এখানে বিক্রি বেশি হচ্ছে। আমাদের বিভিন্ন জায়গায় আরও দোকান আছে। কিন্তু সেগুলোর তুলনায় বসুন্ধরায় বিক্রি বেশি হচ্ছে।’
৪০ শতাংশ ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করছে ক্যাট আই। আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের এখানে সব পণ্যের ৪০ শতাংশ ছাড় দেয়া হচ্ছে। ছাড় দেয়ায় আমাদের বিক্রি বাড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাজুয়াল শার্টগুলো তরুণরা বেশি পছন্দ করছে। এই শার্টের বিক্রিও বেশি। পাশাপাশি ডিজাইনের শার্টও ভালো বিক্রি হচ্ছে’, যোগ করেন আক্তারুজ্জামান।
টি-শার্টের দোকান বুলের ম্যানেজার এরিন বলেন, ‘আমাদের এখানে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। কোনো একটা পণ্য গায়ে দিয়ে দেখলে সেটা আমরা জীবাণুমুক্ত করছি। এসব কারণে কাস্টমার আসার প্রবণতা বেশি, বিক্রিও এখানে বেশি। গত তিন দিনে বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে। শুক্রবার প্রচুর ক্রেতা ছিল। এত পরিমাণ কাস্টমার ছিল, বলার বাইরে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের টি-শার্ট বিক্রিও ভালো ছিল। যেহেতু গরমকাল চলছে, এ সময় টি-শার্ট এমনি ভালো চলে। তাছাড়া টি-শার্ট বিক্রি নির্ভর করে অনেকটা ফেব্রিকের ওপর। আমাদের সব ফেব্রিক ডাবল ময়েশ্চারাইজ। ফেব্রিক ভালো হওয়ায় বিক্রিও ভালো। এবার রাউন্ড মেক আইটেমগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। পলো ব্র্যান্ডের টি-শার্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে।’