শহীদ পরিবারের ২০০ জনকে খাদ্যসামগ্রী উপহার স্বরূপ দেওয়া হয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
গতকাল ৯মে ছিল গজারিয়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র, নিরীহ, ঘুমন্ত এলাকাবাসীর উপর রাতের আঁধারে বর্বরোচিত হামলা ও নির্মমভাবে গুলি করে ৩৬০ জনের অধিক মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করে। নিহত শহীদদের স্মরণ করে যথাযোগ্য মর্যাদায় গণহত্যা দিবসটি স্বল্প পরিসরে পালন করেছে উপজলো প্রশাসন, শহীদ পরিবার ও গজারিয়াবাসী। জানা যায়, ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনী উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ফুলদী নদীর উপকণ্ঠের ১০টি গ্রামে ৩৬০ জনের অধিক নিরীহ মুক্তিকামী মানুষকে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে গুলি করে হত্যা করে। গতকাল শনিবার সকালে গজারিয়া উপজেলা শহীদ পরিবারের আয়োজনে শ্রদ্ধাঞ্জলী ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবার কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন ঠাকুরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হাসান সাদী, বীর মুক্তিযোদ্ধা তানেছ উদ্দিন আহম্মেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর কাদের ঠাকুর, শহীদ পরিবার কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ জালাল বেপারী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (সাবেক) তানেছ উদ্দিন আহম্মেদ ও সেদিনের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আবুল হোসেন, নজরুল ইসলাম মাস্টার, আমির হোসেন ও জালাল আহমেদ জানান, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাতে শুরু করে বাঙ্গালীদের উপর। পাকিস্তানীদের হামলার জবাব দিতে ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যভাগে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার কিছু মুক্তিকামী তরুণ গোসাইচর গ্রামে একটি মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং ক্যাম্প গড়ে তোলেন। সেখান থেকে স্থানীয় যুবকদের প্রাথমিক ট্রেনিং দিয়ে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে পাঠানো হতো। স্থানীয় রাজাকারদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পাক হানাদার বাহিনী ৯ মে ভোরে হামলা চালায় গজারিয়ায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ঘুমিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। ১৯৭১ সালের ৯ মে রবিবার ভোরে সে হামলায় মুক্তিযোদ্ধাসহ মারা যায় ৩৬০ জনের অধিক মানুষ। সেদিন কলাপাতা আর পুরোনো কাপড় পেঁচিয়ে ১০টি গণকবরে কবর দেয়া হয় নিহত ব্যক্তিদের। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও চিহ্নিত করা হয়েছে মাত্র একটি গণকবর। তবে বাকি অরক্ষিত গণকবরগুলো চিহ্নিত করে সংরক্ষণ করার দাবী জানান।
স্মৃতিচারণ সভা শেষে গজারিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের ২০০ জনকে উপহার স্বরূপ ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়।
গজারিয়ায় গণহত্যা দিবস পালিত
আগের পোস্ট