নিজস্ব প্রতিবেদক
“জীবনের তাগিদেই জীবিকা” এমন প্রবাদ সর্বজন পরিচিত হলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে উল্টো চিত্র যেন মুন্সীগঞ্জ লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাট এলাকায়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সর্বক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও এ পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল শুক্রবার টানা ৫ম দিনেও মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে রাজধানীমুখী শ্রমজীবী মানুষের চাপ দেখা গেছে। বৃষ্টি আর করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষ ছুটে চলছে ঢাকার পথে। এদিন সকাল থেকেই ঘাট এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়।
এদিকে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শ্রমজীবী এসব সাধারন মানুষকে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন পাল্টে কর্মস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে বেলা ১টার দিকে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোতে মানুষের ঠাসাঠাসি ভিড়। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছে এসব শ্রমজীবি মানুষ অটোরিকশা, মোটরসাইকেল করে রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে। তাদের গুনতে হচ্ছে ২ গুণ বা ৩ গুণ বেশি ভাড়া। অনেকে আবার পায়ে হেঁটে পাড়ি দিচ্ছে পথ। এসময় অনেক পণ্যবাহী ট্রাক পিকআপগুলোতেও জড়সড় হয়ে যাত্রী চলাচল করতে দেখা যায়। মানুষের এমন চলাচলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে যাত্রীদের সাথে কথা হলে বেশিরভাগই জানান, জীবিকার তাগিদে চাকরি বাঁচাতেই তারা ঢাকা ছুটে চলেছেন।
গার্মেন্টস শ্রমিক শাহাদাত হোসেন জানান, করোনার ভয় তো পাই, কিন্তু ম্যানেজার বারবার কল দিচ্ছে কাজে যাওয়ার জন্য। পরিবার সংসারের জন্য কাজে যাচ্ছি।
আরেক গার্মেন্টস শ্রমিক বলেন, যা টাকা নিছিলাম সব শেষ হয়ে গেছে। এরপর যদি চাকরি চলে যায় হাত পাতা ছাড়া আর কোন কাজ থাকবে না। বাঁচি আর মরি কাজে যাইতে হইবো।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের উপ মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, গত চারদিনের থেকে আজকে যাত্রীদের চাপ কম রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত সংখ্যক ফেরি চালু রয়েছে। দিনের বেলা ৩টি ও রাতের বেলা ৬টি ফেরি চলাচল করছে। রাতে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করায় বেশি ফেরি চলছে। দিনের চেয়ে রাতেই ওসব গাড়ির চাপ বেশি থাকে।