নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে করোনা নিয়ে দিন দিন আতঙ্ক বাড়ছে। অনেকেই হোম কোয়ারেন্টাইন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রয়েছে। অনেকেই আবার ছোট খাট অসুখ বিসুখ, ঠান্ডা, জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে বিভিন্ন মেডিকেল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেত কিন্তু এখন লকডাউন ও গাড়ি চলাচল না থাকায় সাধু যোসেফের মাতৃসদন কেন্দই মূল ভরসা হয় ঐসকল রোগীদের জন্য। প্রতিদিন শতাধিক রোগী সেবা পাচ্ছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার সাধু যোসেফের মাতৃসদন কেন্দ্র হাসপাতালে। ভালো মানের চিকিৎসা সেবায় এই হাসপাতালটি প্রাইভেট কিংবা সরকারী যেকোন হাসপাতালের চেয়ে অনেকখানি এগিয়ে। ছোট্ট একটি কক্ষে চালু হয় বহির্বিভাগ। চিকিৎসক ছিলেন একজন। বর্তমানে ১ জন ডাক্তার ও ৩ জন নার্স দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এলাকাবাসীর দাবী চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পেলে হাসপাতালটি আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এ গল্প মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের খ্রীস্টান পল্লীর সাধু যোসেফের মাতৃসদন কেন্দ্রের। কম মূল্যের চিকিৎসা ও ভালো সেবার জন্য সব মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে এটি। হাসপাতালটি মা ও শিশু চিকিৎসার জন্য সুনাম কুড়িয়ে আসছে শুরু থেকে। উপজেলার শুলপুর একমাত্র খ্রীস্টান ধর্ম পল্লীতে ১৯৬৫ সাল থেকে অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছে সাধু যোসেফের মাতৃসদন কেন্দ্র। জানা যায়, ১৯৬৫ সালে আমেরিকান ফাদার উইচ সি এস সি এই সদনটি চালু করেন। প্রথমে ফার্মেসি আকারে থাকলেও এলাকায় কোন হাসপাতাল না থাকায় তা হাসপাতালে রূপ নেয়। বর্তমানে এ সেবা কেন্দ্রে ৪টি বেড বিশিষ্ট ১টি ওয়ার্ড, সুসজ্জিত প্যাথলজি বিভাগ আছে। এখানে নামমাত্র ফি দিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। স্থানীয় ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার মানুষকে সেবা দিচ্ছে এই সদনটি। রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে সেবার মান খুব ভালো। সাধারণত গাইনি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তারা, প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়েও সেবা দেন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ঔষধ দিয়ে থাকেন এই মাতৃসদন কেন্দ্র। তবে এই সেবা কেন্দ্রে কোন সরকারি সহায়তা পাওয়া যায় না। এখানে অক্সিজেন ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। তারা বলেন, অনেক সময় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাদের অক্সিজেন দিয়ে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু এখানে কোন এম্বুলেন্স না থাকায় রোগী নিতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। কেয়াইন ৫নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য নয়ন রোজারিও জানান, হাসপাতালটি অনেক পুরনো হলেও মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া হয়। এখানে ভিন্ন জেলার লোকও চিকিৎসা নিতে আসে। নামমাত্র ওষুধের খরচ নেওয়া হয়। তবে সরকারী অনুদান পেলে হাসপাতালটি আরও ব্যাপকভাবে প্রসার ঘটবে এবং এলাকাবাসী সুবিধা পাবে ।
কর্মরত নার্স জানান, আমরা নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে বর্তমানে করোনার ভয় আছে। আমাদের সুরক্ষার প্রয়োজন। যদি কিছু সহায়তা পেতাম সেবা দিতে ভালো হত।
ফাদার ডা. লিন্টু ফ্রাঞ্চিশ ডি কস্টা বলেন, অনেক সীমাবধ্যতার মধ্যেও দীর্ঘদিন যাবত এই সেবা কেন্দ্রটি সেবা দিয়ে আসছে। মূলত গাইনি, সাধারণ রোগব্যাধির চিকিৎসা দেওয়া হয় এখানে। এখানকার চিকিৎসকদের করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। আমাদের পক্ষ থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা আছে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমাদের ১টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, কিছু পি পি ই, কিছ ঔষধ ও এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা হলে ভালো হত।