নিজস্ব প্রতিবেদক
পদ্মা সেতু চালুর পর বাগেরহাটের মোংলা বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো তৈরি পোশাক রপ্তানি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙর করা পানামা পতাকাবাহী ‘এমভি মার্কস নেসনা’ নামের একটি জাহাজ পোলান্ডের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো পোশাক রপ্তানি স্মরণীয় হয়ে থাকবে, বলছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। রপ্তানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে- বাচ্চাদের পোশাক, জার্সি ও টি-শার্টসহ বিভিন্ন পণ্য। ২৭টি পোশাক কারখানার তৈরি করা পোশাক বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালুর পর পোশাক কারখানার মালিকরা মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হওয়ায় প্রথমবারের মতো এই বন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানি শুরু হয়। চলতি অর্থ বছর মোংলা বন্দর গাড়ি আমদানিতে চট্টগ্রাম বন্দরকে পেছনে ফেলে রেকর্ড গড়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোস্তফা কামাল বলেন, ‘পথের দূরত্ব ও খরচ কম হওয়ায় আমদানি ও রপ্তানিকারকরা এই বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। নিয়মিত যেন এই বন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানি করা হয় এর জন্য ইতোমধ্যে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
বন্দর ব্যবহারকারীদের প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপক রকিবুল হাসান বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর পোশাক রপ্তানির জন্য রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে অনেক বেশি সাড়া পাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার পোশাকের একটি জাহাজ রওনা দিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কন্টেইনারগুলো ভর্তির কাজ করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় তা সম্ভব হয়েছে। আগামীতে বেশি বেশি পোশাক এই বন্দর দিয়ে বিদেশে রপ্তানি হবে বলে আশা করছি।’
বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, ‘মোংলা বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো পোশাক রপ্তানির প্রধান কারণ পদ্মা সেতু চালু হওয়া। এখন থেকে বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বেড়ে যাবে। জাহাজের সংখ্যা বেড়েছে। বন্দর ব্যবহারে আমদানি রপ্তানিকারকরা আকৃষ্ট হচ্ছেন।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালুর পর এই প্রথম তৈরি পোশাক সামগ্রী বিদেশে যাত্রা করেছে। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে সবচেয়ে কাছের বন্দর হচ্ছে মোংলা বন্দর। পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দর ব্যবহারে আমদানি ও রপ্তানিকারকরা আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
আগামীতে গার্মেন্টসসহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্য এই বন্দর দিয়ে পরিবহন শুরু করবে। গত অর্থবছরে মোংলা বন্দর ২১ হাজার গাড়ি আমদানি করে রেকর্ড হয়েছে। গাড়ি আমদানি ও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আগামী অর্থ বছরে যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা বন্দর চেয়ারম্যানের।
তিনি বলেন, ‘বন্দর ব্যবহারকারীরা বন্দর পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মোংলা বন্দর অর্থনৈতিক হাব হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দর এখন কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছে। বন্দরকে আরো গতিশীল করতে নদী ড্রেজিংসহ নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে। বর্তমানে সাত মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে। আগামীতে নয় মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে।’