স্পোর্টস ডেস্ক
করোনাভাইরাসের হানার কারণে গত ১০ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় স্প্যানিশ লা লিগা। এরপর একএকটি দিন করে পার হয়ে গেলো টানা একটি মাস। কোনো খেলা নেই। স্পেনজুড়ে প্রতিটি স্টেডিয়ামেই এখন মৃত্যুর নীরবতা। নেই কোনো প্রাণচাঞ্চল্য, কোলাহল।
গত একমাসে ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিনতম সময় পার করেছে স্পেন। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছে ১৬ হাজার ৬০৬ জন মানুষ। গত একমাসেরও বেশি সময় দেশটিতে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করা রয়েছে। এই জরুরি অবস্থা কতদিন চলতে থাকবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
ফুটবল নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত দেশ হচ্ছে স্পেন। বিশ্বের সেরা লিগ লা লিগা তাদের দেশে। বছর-মাস কেন, প্রতিটি দিন জুড়েই অসংখ্য ফুটবলীয় কার্যক্রম চলতে থাকে দেশটিতে। কিন্তু গত একমাসে সবই বন্ধ। পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। ফুটবলের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ। এর মধ্যেই বার্সার মধ্যে দেখা দেয় গৃহবিবাদ। ক্লাবে ক্লাবে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক কর্তনের বিষয়টিও ছিল এই এক মাসের অন্যতম আলোচিত বিষয়।
সর্বশেষ ফুটবল বন্ধ হওয়ার আগে ১০ মার্চ ইপুরুয়ায় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল রিয়াল সোসিয়েদাদ এবং এইবারের মধ্যে। ফাঁকা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে এইবারকে হারায় রিয়াল সোসিয়েদাদ। ওই রাতে তার আগেই মেসটালায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভ্যালেন্সিয়া এবং আটলান্টার মধ্যকার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই ম্যাচটাও ছিল ক্লোজডোর স্টেডিয়ামে।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর স্পেনে ফুটবলারদের মধ্যে প্রথম আক্রান্ত হন এজেকুয়েল গ্যারে। ভ্যালেন্সিয়ায় খেলা এই ডিফেন্ডার করোনায় আক্রান্ত হন ১৫ মার্চ। এছাড়া আলাভেসের ১৫জন, এস্পানিওলের ১০ জন করোনায় আক্রান্ত হন, একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হন লিয়ান্দ্রো কাবরেরা এবং উ লেই।
করোনাভাইরাসের এই মহামারি চলাকালেই মৌসুমের বাকি অংশ কিভাবে শেষ করা যায়, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা এবং বিতর্ক তৈরি হয়েছে স্পেনে। এর মধ্যে তৈরি হয়েছে তিনটি পক্ষ। লা লিগা কর্তৃপক্ষ, স্প্যানিশ ফুটবলার্স অ্যাসোসিয়েশন (এএফই) এবং রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন (আরএফইএফ)। একই সঙ্গে আলোচনার বিষয় ছিল খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক কর্তনের বিষয়টিও।
তবে এএফই এবং আরএফইএফের মধ্যে একটি বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে ইতিমধ্যে। মৌসুম শুরু হলে প্রতিটি ম্যাচের ব্যবধান অন্তত ৭২ ঘণ্টা করে রাখতে হবে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং কোপা ডেল রে নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। কখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে? ২৭ জুন যে হচ্ছে না এটা এখন প্রায় নিশ্চিত। পরবর্তী তারিখ সম্পর্কেও কোনো ধারণা আপাতত নেই। অন্যদিকে অ্যাথলেটিক ক্লাব এবং রিয়াল সোসিয়েদাদের মধ্যকার কোপা ডেল রে’র ফাইনাল নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। কবে হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে সেভিলের এস্টাডিও লা কারচুহায়।
করোনার কারণে বন্ধ হয়ে থাকার পর গত একমাসে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক কর্তন। বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, সেভিয়া, আলাভেস, এস্পানিওল- প্রতিটি ক্লাবই দুর্যোগকালীন সময়ে পারিশ্রমিক সম্পর্কিত যে নীতি এবং কর্তৃপক্ষ রয়েছে তাদের কাছে আবেদন পেশ করেছে। সর্বশেষ রিয়াল মাদিদও খেলোয়াড়দের সঙ্গে ১০ ভাগ বেতন কাটার বিষয়ে চুক্তি করে ফেলেছে।
একই সঙ্গে খেলোয়াড়দের চুক্তির বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। যাদের চুক্তির মেয়াদ জুনেই শেষ হওয়ার কথা, তাদের কি হবে? এ বিষয়টাও এখন বড় আলোচনার বিষয় স্প্যানিশ ফুটবলে।
ফুটবল ছাড়া পার হলো একটি মাস
আগের পোস্ট