নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-মূল্যবোধ বিনষ্টের হীন উদ্দেশ্যেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী আর ১৫ আগস্টের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিচক্র একই সূত্রে গাঁথা। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে গ্রেনেড হামলা সংঘটিত ছিল একটি রাষ্ট্রীয় পাপ। আর পাপী ছিলেন তৎকালীন বিএনপি জোট সরকার; জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার পুত্র তারেক রহমান।
গতকাল শনিবার বিকালে মুন্সীগঞ্জ শহরের কালীবাড়িস্থ স্থানীয় সংসদ সদস্যের সভাকক্ষে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা কৃষক লীগ সভাপতি মহাসীন মাখন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, এড. গোলাম মাওলা তপন, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক মোর্শেদা বেগম লিপি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান রিপন, মিরকাদিম পৌর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান শরীফ, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এড. মাহবুবুর রশিদ সবুজ, কাউন্সিলর আব্দুর রহিম বাদশা, আওলাদ হোসেন, মহাকালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হানিফ সিকদার, শিল্পাঞ্চল আঞ্চলিক শ্রমিক লীগ সভাপতি আবুল কাশেম, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সজল আহমেদ মিতালী, সদর উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশা মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান মিজু প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের কলঙ্কময় দিন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকারের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ষড়যন্ত্রে মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের দানবীয় উন্মত্ততায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শান্তি সমাবেশ রক্তাক্ত হয়েছিল। ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল সভ্যতা-মানবতা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-মূল্যবোধ বিনষ্টের হীন উদ্দেশ্যেই প্রকাশ্য দিবালোকে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা এবং জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্টের কালরাতের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা; সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত ও আদর্শের উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামাত অশুভ জোটের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী আর ১৫ আগস্টের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিচক্র একই সূত্রে গাঁথা। ৭৫-এর বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক বেনিফিশারি ছিলেন জিয়াউর রহমান। আর ২১ আগস্টের মাস্টার মাইন্ড ছিল তারই পুত্র মানবতাবিরোধী খুনি তারেক জিয়া।
তিনি বলেন, গ্রেনেড মেরে একটি রাজনৈতিক শক্তির মূল নেতৃত্ব সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার এমন জিঘাংসামূলক রাজনীতির ঘটনা সমকালীন বিশ্বে আর ঘটেনি। কেউ কী কোনোদিন ভাবতে পেরেছে, এই দেশে একটি দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক শক্তিকে পেশাদার খুনিদের দিয়ে গ্রেনেড মেরে সমূলে বিনাশ করবে ? মূলতঃ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্রীয় পাপ। আর পাপী ছিলেন তৎকালীন বিএনপি জোট সরকার। এই জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সরকারের নিয়ন্ত্রক তারেক জিয়া।
তিনি বলেন, ভুল করে মানুষ নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নতুন করে পথ চলার চেষ্টা করে। কিন্তু বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি যাকে আমি এখন আর প্রথা সিদ্ধ রাজনৈতিক দল মনে করি না। এটা দুর্বৃত্তায়নের একটি প্ল্যাটফর্ম। হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রবর্তক জিয়াউর রহমান। তার পরিবারের সদস্যরাও সেই নষ্ট রাজনীতির প্রতিপালন করে চলেছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে বিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে এ ধরনের গণহত্যা সংঘটিত হতে পারে তা কোন সভ্য মানুষ কল্পনাও করতে পারে না। অথচ বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সেই কাজটিই ২১ আগস্টে সংঘটিত করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির ইতিহাসে এমন বর্বরোচিত হত্যাকান্ড ঘটেনি।