Munshigonjer Kagoj
  • মূল পাতা
  • মুন্সিগঞ্জ
    • সদর
    • গজারিয়া
    • টঙ্গিবাড়ি
    • সিরাজদিখান
    • শ্রীনগর
    • লৌহজং
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • অর্থনীতি
  • রাজনীতি
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • অন্যান্য
    • ফিচার
    • জীবনযাপন
    • মতামত
    • শিক্ষা

Munshigonjer Kagoj

logo4 logo3 logo5 prothom-surjadoylogo logo4 logo3 logo5 prothom-surjadoylogo
  • মূল পাতা
  • মুন্সিগঞ্জ
    • সদর
    • গজারিয়া
    • টঙ্গিবাড়ি
    • সিরাজদিখান
    • শ্রীনগর
    • লৌহজং
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • অর্থনীতি
  • রাজনীতি
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • অন্যান্য
    • ফিচার
    • জীবনযাপন
    • মতামত
    • শিক্ষা
মতামতসর্বশেষ সংবাদ

বঙ্গবন্ধু, বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন

by Newseditor ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
written by Newseditor ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০

মো. তাজুল ইসলাম
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা যেকোনো গণতান্ত্রিক কল্যাণরাষ্ট্রের জন্য অতীব জরুরি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সদ্যস্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে পায় নতুন সংবিধান। সেই সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনা ছিল সুদূরপ্রসারী এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদার প্রতিফলন। বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হয় না। বঙ্গবন্ধু, বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন তিনটি শব্দ সংবিধানে তথা বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসে একাকার হয়ে মিশে আছে। একটি বাদ দিলে অপরটি অসম্পূর্ণ। সেকারণে আইনের ছাত্র হিসেবে (বঙ্গবন্ধু ও আইনের ছাত্র ছিলেন) কেন লেখার জন্য এই বিষয়টি বেছে নিলাম তার যথার্থতা প্রমাণের চেষ্টা করবো।

লেখার শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের, যাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ ও জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি আমরা।

অপরাধী যেই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে’ এই স্লোগানে বা প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশের সামগ্রিক বিচারব্যবস্থা এগিয়ে চলেছে। শুদ্ধি অভিযান চলছে। অপরাধ করলে তার বিচার না হওয়া বা না করা এক ধরনের অভিশাপ ও ব্যাধি। অপরাধীর বিচারের মুখোমুখি করা সময়ের দাবি। রাষ্ট্র এখানে সোচ্চার। বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১২ বছর বা এক যুগ পেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মামলা নিষ্পত্তির পরিসংখ্যান হতে দেখা যায় শুধু জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ৮৮ লক্ষাধিক মামলা। মামলা নিষ্পত্তি হার গড়ে ৯৫ শতাংশের বেশি। ১৯৯০-২০০৭ পর্যন্ত শাসন বিভাগ দ্বারা পরিচালিত ম্যাজিস্ট্রেসির নিষ্পত্তির হার ছিল ৮৭ শতাংশের কাছাকাছি। তবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি ১ নভেম্বর ২০০৭ নির্বাহী বিভাগ হতে পৃথক হওয়ার দিন থেকে অদ্যাবধি মামলা নিষ্পত্তির হার কোনো কোনো বছর ১০০ শতাংশ অতিক্রম করেছে।

বর্তমান ফৌজদারি বিচার বিভাগে মামলা নিষ্পত্তির হার শতভাগ হওয়ায় এই কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, অপরাধ করে বিচারের মুখোমুখি না হওয়ার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ বের হতে পেরেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ন্যায়বিচার দর্শন কাজে লাগতে শুরু করেছে। যেকোনো দেশের সভ্যতার মানদণ্ড বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সাথে সম্পর্কযুক্ত।

তাই ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। প্রত্যেক রাষ্ট্রেরই ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে দায়-দায়িত্ব রয়েছে। তেমনি জনগণের আস্থার প্রতিও বিচার বিভাগের দায়ভার রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু আরও বলেছিলেন, বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হলে আপিলের স্তর কমাতে হবে। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন আপিলের স্তর বাড়লে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। মানুষ হয়রানির শিকার হয়। মামলার বয়স ও দীর্ঘসূত্রিতা বাড়ে কিন্তু বিচার প্রার্থীর আয়ু কমে। সে কারণে তিনি বিচার বিভাগকে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি জানতেন দ্রুতবিচার নিশ্চিত করতে পারলে দেশে বিচারহীনতা কমবে। আদালতের ওপর মানুষের আস্থা বহুগুণে বাড়বে। ভবিষ্যত প্রজন্ম ন্যায়বিচার পাবে।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন বিভিন্ন সময়ে তার রাজনৈতিক সভার ভাষণে প্রত্যক্ষ করা যায়। ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথককরণের (ঝবঢ়ধৎধঃরড়হ ড়ভ চড়বিৎ) উদ্যোগ নেন। ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারি দৈনিক বাংলা পত্রিকার ষষ্ঠ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতার অংশবিশেষ এখানে উদ্ধৃত করা যাক-

বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘আমি হাইকোর্ট ও অধস্তন আদালতগুলো যাতে কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করব। আমি এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত করতে চাই যে, দুর্নীতি ও কালক্ষেপণ উচ্ছেদ করার প্রেক্ষিতে বিচার ব্যবস্থার কতকগুলো মৌলিক ত্রুটি সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রশাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের নীতি সূক্ষ্মভাবে পর্যলোচনা করা হবে।’

দেশ ও জাতিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সরকারের তিনটি অঙ্গ- শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হয়। পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক কল্যাণরাষ্ট্র তা-ই করে। অন্যান্য বিভাগের ওপর শাসন বিভাগের আধিপত্য, যা ব্রিটিশ আমল থেকে দৃশ্যমান, সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই কাম্য নয়। দীর্ঘদিনের স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী স্বাধীন বাংলাদেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করে নয়, বরং স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্র তৈরি করার মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা ভেবেছিলেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।

আমরা সকলেই জানি ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথককরণ দিবস। ২০০৭ সালের বাংলাদেশে শাসন বিভাগ থেকে আলাদা করা হয় বিচার বিভাগ। এক যুগ পার হয়েছে সেই পৃথককরণের। এটি বিচারক তথা বিচার বিভাগের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিবস।

বিচার বিভাগের পৃথককরণ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে বর্তমান সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তবে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতাকেন্দ্রিক আধিপত্য কমে যেতে পারে- এ আশঙ্কায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিষয়ে কিছুটা গড়িমসিও দেখা যায়। যা-ই হোক, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা এবং বর্তমান সরকার ও তার আইনমন্ত্রী সংবিধান অনুযায়ী বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কনসেপ্টটিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর- এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

আইনের ব্যাখ্যা দান ও বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে বিচারকদের স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের ক্ষমতাকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বোঝায়। তবে বিচারকদের এ ধরনের স্বাধীনতার অর্থ কোনোভাবে তাদের অবাধ কিংবা যা খুশি তা-ই করার ক্ষমতাকে বোঝায় না। বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়ার পাশাপাশি সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিচারকদের দায় বহুলাংশে বেড়ে গেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংবিধানে বিচার বিভাগকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সংবিধান সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানবিরোধী বিধি-বিধানকে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত ঘোষণার ক্ষমতা দিয়েছে। সংবিধানের ৭ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনগণের অভিপ্রায়ে পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধান বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়েছে।

সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে অর্থাৎ রাষ্ট্র্র পরিচালনার মূলনীতি অংশের অনুচ্ছেদ ২২-এ বলা হয়েছে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথককরণের বিধান সম্পর্কে। ‘রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন। (অৎঃরপষব ২২ ড়ভ ঃযব ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ ঢ়ৎড়ারফবং ঃযধঃ ঃযব ঝঃধঃব ংযধষষ বহংঁৎব ঃযব ংবঢ়ধৎধঃরড়হ ড়ভ লঁফরপরধৎু ভৎড়স ঃযব বীবপঁঃরাব ড়ৎমধহং ড়ভ ঃযব ঝঃধঃব.)।

সংবিধানের তৃতীয় ভাগের মৌলিক অধিকার অংশের ২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সকল প্রচলিত আইন যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ সংবিধান প্রবর্তন থেকে সে সকল আইন ততখানি বাতিল হবে।’ অর্থাৎ সংবিধান আমাদের বিচার বিভাগকে স্বতন্ত্র, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিচারকদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সংবিধানের ১১৬ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- বাংলাদেশের সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে বিচারকর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ ও ম্যাজিস্ট্রেট বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন। (১১৬অ. ঝঁনলবপঃ ঃড় ঢ়ৎড়ারংরড়হং ড়ভ ঃযব ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ, ধষষ ঢ়বৎংড়হং বসঢ়ষড়ুবফ রহ ঃযব লঁফরপরধষ ংবৎারপব ধহফ ধষষ সধমরংঃৎধঃবং ংযধষষ নব রহফবঢ়বহফবহঃ রহ ঃযব বীবৎপরংব ড়ভ ঃযবরৎ লঁফরপরধষ ভঁহপঃরড়হং.) অর্থাৎ সংবিধানের বিধানমতে বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন।

তাদের নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে- ‘বিচারবিভাগীয় পদে বা বিচারবিভাগীয় দায়িত্ব পালনকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক উক্ত উদ্দেশ্যে প্রণীত বিধিসমূহ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নিয়োগদান করিবেন।’

বলার অপেক্ষা রাখে না যদি কোনো রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তবে বিচারকার্যে নানা রকমের জটিলতার সৃষ্টি ও ন্যায়বিচার প্রলম্বিত হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার পর ক্ষমতা চলে যায় স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে এবং সামরিক শাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে সংবিধান বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়। ২০০৭ সালের আগে পর্যন্ত ক্ষমতাসীনরা নিজেদের ইচ্ছামতো বিচার বিভাগকে সাজাতে চেয়েছে। অবশেষ স্বাধীনতার ৩৭ বছর পর অরাজনৈতিক ও সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সিদ্ধান্তে আপন পথ ফিরে পায় বিচার বিভাগ। জাতির জনকের সময়ে প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদের এই বাস্তব রূপদান ছিল এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, যাকে দেশের বিচারাঙ্গনসহ সব স্তরের জনগণ সাধুবাদ জানায়।

বিচার বিভাগ স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে ২০০৭-২০০৮ সালে বেশ কিছু আইন সংশোধন ও নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়, যেখানে ১৯৭২ সালের সংবিধানে উল্লিখিত বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রতিফলন ঘটে। যেমন- বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা ২০০৭, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পে স্কেল-২০১৬ ইত্যাদি। এ ছাড়া অধস্তন আদালতগুলোর শৃঙ্খলা বিধানসহ একটি আলাদা ও স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়।

সবচেয়ে যুগান্তকারী সংশোধনী আনা হয় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এ। এই আইনের ০৬ ধারায় দুই ধরনের ম্যাজিস্ট্রেটের পদ সৃষ্টি করা হয়। এক পক্ষে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও অন্যপক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭-১৪৮ ধারা, ১৭৬ ধারাসহ আরও কিছু ধারা যেমন ২৯(বি) ধারায় কার্যক্রম পরিচালনা ও দণ্ড প্রদানের ক্ষমতাসহ মোবাইল কোর্ট ২০০৯ এর অধীনে বাংলাদেশে প্রচলিত ১১৯টি (২০১৯ পর্যন্ত) আইনে নির্বাহী ম্যাজিস্টেটরা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।

বিচার বিভাগের হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা মূলত বিচার বিভাগ পৃথককরণ নীতির বাস্তবায়ন। জনগণ ইতোমধ্যে বিচার বিভাগ পৃথককরণের সুফল টের পাচ্ছে। এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মামলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং হচ্ছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে।

বিশ্বের মধ্যম আয়ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমাদের দেশে নির্বাচিত সরকার, আইন পরিষদ ও জাতির পিতার হাতে গড়া দেশ ও বিচার ব্যবস্থার নিরিখে দেশে গণতন্ত্রকামী জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা পূরণ করার উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান। তারপরও বাস্তবে আইনের শাসনের প্রতিফলন ঠিক সে রকম ফলাও করে লেখার মতো নয়। বোধ করি সে কারণে এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে জাতির জনক বলেছিলেন, ‘আমরাও বিচার বিভাগকে একই উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।’ তিনি মনে করেন, আমাদের মতো দেশে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব যাদের কাছে থাকে, তারা প্রায়শই ভুলে যান যে তাদের সে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব দেশের প্রচলিত আইন ও আইন প্রতিষ্ঠানের অধীন।

যদি বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়, তবে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন শক্তিশালী ভিত্তির ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে। সেদিক বিবেচনায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আমাদের রাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ। একই সঙ্গে বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সার্বিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করা শুধু স্বাধীন বিচার বিভাগের একার পক্ষে সম্ভব নয়। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। শাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথক (ঝবঢ়ধৎধঃরড়হ ড়ভ চড়বিৎ) হওয়াটা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার সবচেয়ে শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম মাত্র।

বিচার বিভাগের কাছে ন্যায়বিচার পাওয়া যেসব উদ্যোগ ও অনুষঙ্গের ওপর নির্ভর করে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বিচারকদের সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত মানসিকতা। তারা যদি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংকল্পে শক্ত অবস্থান নেন তবে পৃথককরণের সুফল মিলবে তাতে সন্দেহ নেই।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে আপসহীন। জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে বিচার বিভাগের পৃথককরণ নীতি তার সরকারের আমলে বাস্তবায়ন হবে। তারা আরও আশা করে, বিচার বিভাগ যাতে সামগ্রিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বদা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারে সে ব্যাপারে সরকার সার্বিক সহযোগিতা এবং বিচার প্রশাসনে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা (ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ এড়ধষ) অর্জনে বদ্ধপরিকর।

সুতরাং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে সব সরকার, রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের এক মঞ্চে আসা দরকার। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ন্যায়বিচারের কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন. ‘যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও, সে একজনও যদি হয়, তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।’ তাই ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

লেখক: বিচারক, (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ) বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস

০ comment
আগের পোস্ট
পেটের চর্বি গলানোর প্রাকৃতিক উপায়
পরের পোস্ট
মহাখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই নারী নিহত

You may also like

মুন্সীগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২ শত গৃহহীন পরিবার খুঁজে...

জুলাই ৮, ২০২১

পোল্ট্রির দাম একদিনে কেজিতে কমল ৪০ টাকা

মে ২৬, ২০২০

বিকালে ঢাকা ছাড়ছে ব্রিটিশদের দ্বিতীয় দলটি

এপ্রিল ২৩, ২০২০

আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেছে আমেরিকা: ইরান

মার্চ ২, ২০২০

বিশ্ববাজারে বেড়েছে স্বর্ণের দাম

জানুয়ারি ১৫, ২০২২

অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নিজের ভাতা বিলিয়ে দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

জুলাই ৩০, ২০২০

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে ইউরোপে

মে ২১, ২০২০

শ্রীলঙ্কায় ক্যাম্প আয়োজন করবে বিসিবি

জুলাই ১৭, ২০২০

সংকটে পড়লেও কর্মী ছাঁটাই করবে না প্রাইম ব্যাংক

এপ্রিল ১৯, ২০২০

যে কারণে জনপ্রিয় হলো ফটো ল্যাব অ্যাপ

জুন ২৬, ২০২০

Leave a Comment Cancel Reply

Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.

অনুসন্ধান করুন

সাম্প্রতিক পোস্ট

  • উপজেলা উপ-নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শুরু
  • মুন্সীগঞ্জে গাঁজাসহ মাদক মামলার আসামী গ্রেপ্তার
  • জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে আসিনি: প্রধানমন্ত্রী
  • সাত মাসে রপ্তানি আয় ৩২.৪৪৭ বিলিয়ন ডলার
  • ৪ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ, বাড়তে পারে শীত

সকল নিউজ এখন ফেসবুকে

Facebook

Popular in Bangladesh

  • প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জনসভার অনুমতি পেল বিএনপি

    আগস্ট ২৯, ২০১৮
  • ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য আটকে আছে গারো মা-মেয়ে হত্যার তদন্ত

    মে ১৯, ২০১৮
  • খুলনার অভিজ্ঞতায় আগামীর কৌশল কষছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি

    মে ১৯, ২০১৮
  • দুই মেয়েকে নিয়ে কোথায় গেলেন বাবা?

    মে ২০, ২০১৮
  • গ্রামবাসীর ভোগান্তি চরমে : শ্রীনগরে সরকারী রাস্তা দখল করে মাটি ভরাট

    জুলাই ২১, ২০১৯

মুন্সীগঞ্জ কাগজ সম্পর্কে

সম্পাদকঃ মোহাম্মদ আরফিন
॥ হিমা বেগম কর্তৃক দৈনিক মুন্সীগঞ্জের কাগজ লিমিটেড-এর পক্ষে মিতু প্রিন্টিং প্রেস,২০/এ, নয়াপল্টন,ঢাকা থেকে মুদ্রিত এবং হোয়াইট হাউজ, মুন্সীগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির (৩য়তলা)
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দক্ষিণ পাশে, মুন্সীগঞ্জ সদর, মুন্সীগঞ্জ হইতে প্রকাশিত।
ই-মেইল : munkagoj@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭০৬৯৭০০৩৬
+৮৮০১৭০৬৯৭০০৩৮
ঢাকা অফিস : বায়তুল খায়ের কমপ্লেক্স (৮ম তলা),৪৮/এ-বি, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন : ৯৫১৫৭৬৪, +৮৮০১৭২৭৩৭৬৬৭৭, +৮৮০১৭০৬৯৭০০৩৭

আন্তর্জাতিক

  • চীনে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প

    জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
  • রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ২৪ ঘণ্টা লাগবে, দাবি ট্রাম্পের

    জানুয়ারি ২৮, ২০২৩
  • বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে ঢাকা

    জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
  • যুক্তরাষ্ট্রে ফের বন্দুক হামলা, নিহত ৭

    জানুয়ারি ২৪, ২০২৩
  • ইসলামী জগৎ
  • গ্রাম বাংলা
  • প্রতিভার অন্বেষন
  • মহিলা অঙ্গণ
  • শিল্প-বাণিজ্য
  • সম্পাদকীয়
  • সাহিত্য
  • স্বাস্হ্য ও চিকিৎসা

© ২০১৯ - মুন্সিগঞ্জের কাগজ . সকল অধিকার সংরক্ষিত।