নিজস্ব প্রতিবেদক
মসজিদের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরণে আহত হন মামুন প্রধান। ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাটিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরা তিনিই প্রথম রোগী। সোমবার নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদের কাছে তার বাসায় বিছানায় শুয়ে এই গার্মেন্টস শ্রমিক গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতের সেই বিস্ফোরণের বিবরণ দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকের এ বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হন। এর মধ্যে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট ও গ্যাস পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে এ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালফেরত মামুন জানান, সামনের রাস্তা পানিতে তলিয়ে থাকায় চলাচলের জন্য ওই মসজিদের দেয়াল ও গেইট ঘেঁষে ইটের খোয়া ফেলা রয়েছে। ওই পাশ দিয়ে লোকজন চলাচল করে। বিস্ফোরণের সময় ওই পথে কেনাকাটা করতে দোকানে যাচ্ছিলেন তিনি। তখন মসজিদে এশার নামাজ পড়ছিল অনেকে। যখন মসজিদের পাশের রাস্তা দিয়ে তিনি যাচ্ছিলেন হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের আগুন ভেতরে থেকে ছিটকে এসে তার শরীর ঝলসে দেয় বলেন তিনি। “আগুনে পুড়ে তখন মুসল্লিদের হৃদয় বিদারক চিৎকার আহাজারি শুনছি। মনে করেছি বাঁচব না। আল্লাহর কৃপায় সুস্থ হয়ে হয়ে ফিরে এসেছি।” আহত হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় লোকজন তাকেসহ অন্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানান তিনি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা ভালো সহযোগিতা করেছে উল্লেখ করে আহত মামুন প্রধানের স্ত্রী রুবি আক্তার বলেন, সবার কাছে দোয়া চাই আমার স্বামী বাড়ি ফিরে এসেছেন। “সবার কাছে দোয়া চাই যারা আহত আছে তারা যেন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে” যোগ করেন তিনি। এদিকে মানুন প্রধান সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক ফল নিয়ে মামুনের বাড়িতে দেখতে গিয়েছিলেন। ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, দগ্ধদের মধ্যে প্রথম রোগী মামুন প্রধান সুস্থ হয়ে বার্ন ইউনিট থেকে বাড়ি ফিরেছেন। মামুনের অবস্থা ভালো, এ কারণে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। মামুনের বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে পরিবারে সদস্যদেরকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। তিনি জানান, মামুনকে দশ হাজার টাকা অনুদানসহ ৩০ কেজি চাল দিয়েছেন তিনি। এ বিস্ফোরণে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।