নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ইমাম ক্যাটেল ফার্ম বিডি নামক একটি খামারে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেড় শতাধিক উন্নতজাতের দেশী-বিদেশী গরু লালনপালন করা হয়েছে। গরুগুলো এখন বিক্রির জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। উপজেলার কোলা ইউনিয়নের হাতারপাড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন উপজেলা রোডের পাশে প্রায় ৭ বিঘা জমির ওপরে গড়ে উঠা খামারটি থেকে এরই মধ্যে কুরবানির গরু বিক্রি শুরু হয়েছে। দেশী-বিদেশী উন্নত জাতের ষাঁড়, বলদ ও মহিষ রয়েছে খামারটির ভান্ডারে। প্রথমবারের মত এ বছরই বাণিজ্যিকভাবে এসব গরু লালনপালন শুরু করেন পুরান ঢাকার বাসিন্দা সালাউদ্দিন অপু নামে এক ব্যবসায়ী। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশাল দুইটি শেডে আলাদা আলাদা ও সারিবদ্ধভাবে গরু বাঁধা রয়েছে। এসব গরুর লালনপালন ও পরিচর্যায় ৭/৮ জন শ্রমিক কাজ করছেন। দেখা গেছে, অত্যাধুনিক খামারটিতে ভেজালমুক্ত মানসম্মত সব গো-খাবার দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্য করা যায়, খামারে কয়েকজন ক্রেতা কুরবানির জন্য ষাঁড় গরুর দরদাম ঠিক করছেন। এসময় ঢাকা থেকে আসা মো. মোমেন নামে এক ক্রেতা বলেন, তার একটি লাল রংয়ের ষাঁড় গরু পছন্দ হয়েছে। খামারী গরুটির দাম সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাঁকান। পরে গরুটি ৩ লাখ টাকায় ক্রয় করেন। কিছুটা কমদামে পছন্দের গরু কিনতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি। একই জেলার পার্শ্ববর্তী শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর এলাকার শাহাদাত হোসেন নামে অপর ক্রেতা বলেন, জানতে পারি এই খামারে বিভিন্ন আকারের গরু আছে। তাই কুরবানির জন্য পছন্দের একটি গরুর খোঁজে এখাসে আসি। ইমাম ক্যাটেল ফার্ম বিডির পরিচালক মো. সালাউদ্দিন অপু বলেন, এই বছরই প্রথম নিজস্ব অর্থায়নে বাণিজ্যিকভাবে খামারটি গড়ে তুলেছেন তারা। এখানে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে। গত ১০ মাস যাবত এসব গরুর লালনপালন করছেন তিনি। তিনি জানান, এরই মধ্যে ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমে খামারের প্রায় ৫০ ভাগ গরু বিক্রির জন্য বুকিং হয়ে গেছে। কুরবানির জন্য প্রস্তুত এখনো শতাধিক ষাঁড় ও বলদ গরু আছে তার ভান্ডারে। এখানে ভেজালমুক্ত গো-খাবার ও পরম যত্নে এসব গরু লালনপালন করছেন তিনি। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, পুরান ঢাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন কয়েক বছর আগে শখবসত একটি গরুর খামার গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের হাতারপাড়ায় জমি ক্রয় করেন। তার কিছুদিন পরে অসুস্থতার কারণে দুনিয়ার মায়া ছেড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তার ৩ পুত্র জামাল উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন ও সালাউদ্দিন অপু খামারটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে নিজস্ব খামারটির পরিচালক হিসেবে ছোট ভাই সালাউদ্দিন অপু দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে বাণিজ্যিকভাবে গরু খামার করার পাশাপাশি আলাদা শেডে বিভিন্ন জাতের হাঁস ও মুরগীর খামার গড়ে তুলেছেন তিনি।