নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলা জুড়ে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। শীতের শুরুতেই অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা খেজুর গাছের কদর বেড়ে উঠেছে। গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছেন। শুরু করেছেন প্রাথমিক পরিচর্যাও। যাকে এক কথায় বলা হয় গাছ তোলা। এক সপ্তাহ পরই আবার গাছে চাছ দিয়ে নলি ও গুছা লাগানো হবে। খেজুর গাছ থেকে রস বের করতে তিনটি স্তর পেরিয়ে ১৫-২০ দিন পরেই রস আহরণ শুরু করা হবে। মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায় রাস্তার পাশে থাকা খেজুর গাছ চাছার দৃশ্য। গাছিরা গাছ চাছার ব্যস্ত সময় পার করছে। আর কিছুদিন পরই মধু বৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়, পাটালি, তৈরির উৎসব।
সুস্বাদু পিঠাপুলির জন্য অতি জরুরি উপকরণ হওয়ায় খেজুরের রসের চাহিদা বেড়ে যায়। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এই খেজুর গাছ আজ অবহেলায় অযত্নে বিলুপ্তির পথে। যে পরিমাণে খেজুর গাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায় রোপন করা যাচ্ছে না। অঞ্চলগুলো থেকে গাছ কমে গেছে। খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ির মোয়া ও নানা রকমের মুখরোচক খাবার তৈরির ধুম পড়বে কদিন পরেই। আর রসে ভেজা বিভিন্ন ধরনের পিঠার স্বাদই আলাদা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গাছিরা শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে খেজুর গাছ কাটার প্রতিযোগিতায় গাছিরা খেজুর গাছ পরিষ্কার করার জন্য দা, পাটের দড়ি, মাটির কলস, বাঁশের চটি ব্যবহার করে থাকে।
জব্বার আলী নামে এক গাছির সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এ বছরও তিনি খেজুর গাছের রস সংগ্রহে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। তিনি এক সপ্তাহে প্রায় ২০টি খেজুর গাছ পরিষ্কার করে ছিলে রেখেছেন রস সংগ্রহের জন্য। গত বছরের তুলনায় এ বছর খেজুর গাছ অনেক কমে গেছে। প্রতি বছর শীত এলেই তিনি খেজুরের রস সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রয় করে থাকেন। রস বেচে সংসার চালান তিনি। আরো বলেন, প্রতিদিন দুই থেকে তিন ভার খেজুরের রস তিনি সংগ্রহ করেন। রস প্রতি গ্লাস ২০ টাকা ও ৮০ টাকা সের ধরে বিক্রয় করে থাকেন। এতে করে শীত মৌসুমে রোজগার মোটামুটি ভালো হয় বলে তিনি জানান।