নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিপর্যস্ত বিশ্ব। অদৃশ্য এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।
এখন পর্যন্ত এই রোগের কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় সবাইকে ঘরে থাকতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তিন বেলা খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে অসহায় মানুষগুলো।
তবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে যাতে অভুক্ত থাকতে না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। ত্রাণ সামগ্রী চুরি করলে কঠোর হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কঠোর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ চুরির খবর পত্র-পত্রিকায় উঠে আসছে নিয়মিত। ত্রাণ চুরি ধরা পড়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনেককে বরখাস্ত গ্রেফতারও করেছেন প্রশাসন।
ত্রাণ চুরির খবর পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিমের পুত্র দীর্ঘদিন যাবৎ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান শামীম। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনার সময় যে ত্রাণগুলো দিচ্ছেন, তা সাধারণ মানুষের হক। যারা অসহায় মানুষের এই হক মেরে খাচ্ছে, তারাই প্রকৃত জালেম। আর জালেমদের আল্লাহ কখনোই মাফ করবেন না। পরকালে তো শাস্তি পাবেই, এই দুনিয়াতেও তারা ক্ষমা পাবে না।’
আব্দুল্লাহ আল নোমান শামীম আরো বলেন, ‘চুরি তো সারা বছরই করে, তবে এই সময় মানুষ চুরি করবে, এটা চিন্তাও করা যায় না। এখন মানুষ এত বিপদে আছে, যারা কোনোদিন চিন্তাও করেনি মানুষের কাছে হাত পেতে খেতে হবে, তারাও আজ সাহায্যের জন্য অপেক্ষায় থাকে। কারো কাছে চাইতে লজ্জা পায়। মাথা নিচু করে কোনোমতে ত্রাণ নিয়ে চলে যায়।’
‘আরেকটা শ্রেণি আছে যারা দিনমজুরি করে, তাদের তো হাতে টাকা থাকার কথা না। কোথাও কোনো কাজ নাই, কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। কেউ নিজের বাসাবাড়িতে কাজের বুয়া পর্যন্ত রাখছে না। আর ত্রাণগুলো যদি মানুষ না পায়, তবে তো মানুষ না খেয়ে মরবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে ত্রাণ সাধারণ মানুষের জন্য দিয়েছেন, তা সহিসালামতে মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া উচিত। সামর্থ্য থাকলে বরং নিজের হাত থেকে আরো কিছু বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। এটা করলে নিজেকে সে মানুষ হিসেবে দাবি করতে পারবে। যে চুরি করছে, সে মানুষ না।’
তিনি গত দেড় মাস ধরে ৪ বারে তার নিজস্ব অর্থায়নে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা ও শ্রীনগর উপজেলার কয়েক হাজার কর্মহীন পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। তার যতটুকু সামর্থ্য, তার অধিক হলেও প্রয়োজন মতো আরো ত্রাণ দেয়ার কাজ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন নোমান শামীম।