নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল মাঠপাড়ায় অবৈধ ড্রেজার পাইপের পানিতে ১০/১২টি বসতবাড়ি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার ড্রেজার ব্যবসায়ী কাশেম ও লিটন যত্রতত্রভাবে ড্রেজার পাইপ লাইন নেওয়ার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ মাস যাবত পানিবন্দি হয়ে পরিবারগুলো চলাফেরায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। গত ৪ দিন আগে ওই বাড়ির ১ ব্যক্তি মারা গেলে স্বজনরা পানিবন্দির কারণে লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বসতবাড়ির আঙ্গিনায় প্রায় হাঁটু পানি জমে আছে। জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ির বৃদ্ধসহ শিশুরা ঘরের বাহিরে আসতে পারছেনা। সাংসারিক কাজেকর্মে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাড়ির নারীদের। এছাড়াও বদ্ধ পানিতে বিষাক্ত মশা-মাছির বংশবিস্তার হচ্ছে। এতে করে বসবাসকারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন। লক্ষ্য করা গেছে, ওই জলাবদ্ধ বাড়ির সামান্য দক্ষিণ পাশে ভাগ্যকুল স্কুল রোডের আজাহারের বাড়ির সামনে রাস্তার উপর দিয়ে ড্রেজার পাইপ লাইন টানা হয়েছে। রাস্তার উপরে পাইপের কারণে সাইকেল, মোটরসাইকেল, অটোরিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন যাতায়াতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দেখা গেছে, ড্রেজার পাইপের ফাটল দিয়ে পানি পড়ে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসময় শফিকুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, রেজাউল আহম্মেদ, রফিকুল ইসলাম, বিমল দাস, শুকুর, শাহিদা বেগমসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ড্রেজার ব্যবসায়ী কাশেম, লিটনসহ একটি সিন্ডিকেট ২ বছর আগে জোরপূর্বক এখান দিয়ে ড্রেজারের পাইপ নেয়। এসব পাইপের পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে গত ৪ মাস ধরে বসতবাড়ি পর্যন্ত জলাবদ্ধ হয়ে আছে। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এই পাড়ার ১ ব্যক্তি মারা গেলে জলাবদ্ধ বাড়িতে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বারবার বলা হয়েছে পাইপ অপসারণের জন্য। তাতে কোন কাজে আসেনি। বেশী কিছু বললে প্রভাবশালী ড্রেজার ব্যবসায়ীরা আমাদেরকে হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হাই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ নিয়ে এলাকায় বহুবার বলা হয়েছে। ড্রেজার ব্যবসায়ী কাশেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন, ড্রেজারে মাটি ভরাটের কাজ করে মানুষের উপকার করছি। জোরপূর্বকভাবে মানুষের সমস্যার সৃষ্টি করে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা কতটা যুক্তিসঙ্গত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে ড্রেজার ব্যবসা এভাবেই হয়। লিটনের কাছে জানতে চাইলে জলাবদ্ধতার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুরোটা ড্রেজারের পানি নয়। এখানে বৃষ্টির পানিও রয়েছে। এ ব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব কুমার ঘোষ জানান, দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।