নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকল্প যুবধারার এক নেতার নেতৃত্বে দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার আটপাড়া ইউনিয়নেরর পশ্চিম ও পূর্ব হাঁসাড়াগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার, শনিবার ও গতকাল রোববার ৩ দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনায় পূর্ব হাঁসাড়াগাঁওয়ে দোকানঘর ভাঙচুর ও উভয়পক্ষের ৫ জন আহত হয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার পূর্ব হাঁসাড়াগাঁও গ্রামের আশরাফ আলীর পুত্র মোঃ০ বাচ্চু (৫৫) বাড়ির কাজের জন্য ভ্যানে করে বাঁশ ও বেড়া আনছিল। পশ্চিম হাঁসাড়াগাঁও রাস্তার মোড় ঘুরতে গিয়ে একটি ল্যাম্প পোষ্টের সাথে বাঁশ লাগলে উপস্থিত পশ্চিম হাঁসাড়াগাঁওয়ের আবুল কালাম কালু (৫০) ও তার ভাতিজা রাব্বি মোঃ বাচ্চুকে গালমন্দ করে। এসময় কেন্দ্রীয় বিকল্প যুবধারা নেতা মো. নূর হোসেন সুমনকে জানালে তিনি সায়েস্তা করার হুকুম দিলে চাচা ভাতিজাসহ শহিদুল (৪২), রাব্বি (২০), নাফিজ (২২) বাচ্চুকে মারধর করে আহত করে। পরেরদিন শনিবার বিকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাটি মীমাংসার জন্য নূর হোসেন সুমনের সাথে কথা বলতে গেলে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে। সন্ধ্যার দিকে পশ্চিম হাঁসাড়াগাঁও ও পূর্ব হাঁসাড়াগাঁও গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে করে পশ্চিম হাঁসাড়াগাঁওয়ের মোঃ মতলব ও পূর্ব হাঁসাড়াগাঁওয়ের আলী নুরসহ অপু আহত হয়। তার পরেরদিন গতকাল রোববার বিকালে পুনরায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন তন্তরের পাড়াগাঁও গ্রামের লোকজন নিয়ে পূর্ব হাঁসাড়াগাঁওয়ে এসে দোকানে হামলা চালিয়ে দোকানঘর ভাঙচুর ও দোকানি খোকাকে মেরে আহত করে তারা। এসময়ও বিকল্প যুবধারার নেতা নূর হোসেন সুমন উপস্থিত ছিলেন।
মোঃ বাচ্চু বলেন, নূর হোসেন সুমনের হুকুমে আমাকে তারা মারধর করে। সুমন নিজেকে স্থানীয় এমপির লোক দাবী করে বলে, আমার কিছুই করতে পারবা না।
ওই এলাকার মোঃ আজাহার হোসেন, মোঃ আসাদুজ্জামান, সাইফুল, আক্তার, আবু বকরসহ অনেকেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উস্কানি দিয়ে সংঘর্ষ বাঁধানোর তীব্র নিন্দা জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ শাজাহান মোল্লার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন সংঘর্ষ হওয়াটা অতি দুঃখজনক। বিকল্প যুব ধারার নেতা নুর হোসেন সুমন ইচ্ছে করলে ওখানেই ঘটনাটির সমাধান করতে পারতেন। তা না হয়ে শনিবার সন্ধ্যার দিকে সংঘর্ষ হয়। জনপ্রতিনিধি হিসেবে পশ্চিম হাঁসাড়াগাঁওয়ে গেলে বহিরাগতরা আমাকে আটক করে রাখে। এখানেও সুমনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ হিরু জানান, ঘটনাটির সমাধানে বিকল্প যুবধারা নেতার সাথে কথা বলেছিলাম। তিনি মঙ্গলবার বসার জন্য বলেন। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে সুমন বহিরাগত লোকজন নিয়ে আক্রমণ চালায়। পরে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে সুমনের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, গতকাল রোববার বিকালেও পাড়াগাঁও থেকে লোকজন নিয়ে এসে সুমন এখানে হামলা চালায়। বিকল্প যুবধারা নেতা নূর হোসেন সুমনের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সব অস্বীকার করে বলেন, যদি কোনও অন্যায় কাজের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে যে শাস্তি হয় তা মেনে নিব।
শ্রীনগর থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।