নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রাচীনকাল থেকেই বর্ষায় মানুষের অন্যতম যাতায়াত বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নৌকা বা কোসা। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বর্ষার আগমনে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা বা কোসার চাহিদা বেড়েছে। ফলে এ উপজেলায় নৌকা তৈরি ও বেচাকেনার শুরু হয়েছে। নৌকা তৈরিতে কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা রাতদিন একটানা কাজ করেও চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছেন। গতবছরের তুলনায় এ বছর নৌকা বা কোসা তৈরির কাঠ ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় নৌকা তৈরির কারিগররা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাড়ৈখালী ইউনিয়নের শিবরামপুর হাটের বিভিন্ন স্থানে কারিগররা নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটছে, কেউ হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক লাগাতে ব্যস্ত।
নৌকা তৈরির কারিগর (মিস্ত্রি) টেক্কা মার্কেটের মোঃ হানিফা, মোঃ বাবুল ও মোঃ শাহআলম বলেন, অনেক আগে থেকেই বর্ষার সময় নৌকা তৈরি করি। বড় নৌকার চেয়ে ছোট ডিঙ্গি ও কোসা নৌকার চাহিদা বেশি। এতে প্রতিটি ১২ হাতের নৌকা বানাতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বিক্রি করা যায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়।
গোয়ালীমান্দ্রা হাটের নৌকার কারিগর মোঃ দিদার বলেন, বর্ষা মৌসুম এলে নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকি। এইসময় নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। আমরাও অতিরিক্ত কিছু আয় করতে পারি। একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে ৬ হাজার টাকার কাঠ লাগে। একটি নৌকা বানাতে দুইজন মিস্ত্রীর ৩-৪ দিন সময় লাগে। তাদের মজুরী দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। তবে কাঠের দাম ও হেলপারদের মজুরী বেড়ে যাওয়ায় লাভ তুলনামূলকভাবে কম হয়। বাণিজ্যিকভাবে বড় আকারের ৫০ হাতের একটি কাঠের নৌকা তৈরি করতে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়।
নৌকা কিনতে আসা মোস্তাকিম আহমেদ আলিফ বলেন, বর্ষা মৌসুম এলেই নিচু এলাকাতে নৌকার প্রয়োজন দেখা দেয়। তাছাড়া আমাদের কোলাপাড়া কিছু গ্রামে নিচু হওয়ায় বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে যায়। নৌকা ছাড়া চলাচলের কোনো উপায় থাকে না। তখন নৌকাই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। এছাড়া অনেকেই পুরাতন নৌকা মেরামত করে নিচ্ছেন ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্য।
শ্রীনগরে বর্ষার শুরুতেই নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা
আগের পোস্ট