নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর। সেশন জটের কারণে পড়ালেখা শেষ করতে করতে ২৬ থেকে ২৭ বছর হয়ে যাচ্ছে। চাকরির আবেদন করার সময় থাকে ৩ থেকে ৪ বছর। আবেদন করার পরে পরীক্ষা সময়মত না হওয়াতে চাকরি প্রত্যাশীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির নিয়োগ সরকারি কর্ম-কমিশন (পিএসসি) দিলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্ব মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর। অনেক প্রতিষ্ঠানেই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার পরও নিয়োগ কাজ ঝুলে আছে। কোনো কোনো মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও নেওয়া হচ্ছে না পরীক্ষা।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা পদে ১০৮০ জনকে নিয়োগ দেয়ার লক্ষ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১০ মার্চ ২০২০ সালে। যার আবেদন শেষ হয়েছে ২০ এপ্রিল ২০২০ সালে। ২ বছর ৩ মাস ১২ দিন হলেও এখনো লিখিত পরীক্ষা হয়নি। ডাক অধিদপ্তর, পোস্ট অফিস পদের নাম পোর্টাল অপারেটর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। তিন বছর হতে চললেও এখনো লিখিত পরীক্ষার খবর নেই। মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১০ আগস্ট ২০২১ সালে। একই বছর ১৭ ডিসেম্বর ১৫-২০ তম গ্রেডের ৩ ক্যাটাগরির জনবল নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৮ ডিসেম্বর (ক) পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ১০টি পদে ৫২ জন (খ) পরিবার কল্যাণ সহকারী ৯৩টি পদে ৩৮০ জন (গ) আয়া ৮টি পদে ৪০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তাদের মৌখিক পরীক্ষা ২১, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর হবার কথা থাকলেও ২০ তারিখ রাত নয়টায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় মৌখিক পরীক্ষা আগামী ২, ৩, ৪ জানুয়ারী ২০২২ এ অনুষ্ঠিত হবে। পহেলা জানুয়ারি রাতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর ৭ মাস পার হলেও মৌখিক পরীক্ষা এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। পরীক্ষা না হলেও এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতি আবেদনের জন্য বেকার চাকরি প্রার্থীদের গুনতে হচ্ছে কমপক্ষে ১২০ থেকে ৩০০ টাকা। অনেক প্রতিষ্ঠান চাকরির আবেদনের জন্য ফি নিচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এদিকে ফি দিয়ে আবেদন করেও পরীক্ষা না দিয়েই চাকরির বয়স শেষ হচ্ছে অসংখ্য প্রার্থীর। ফলে তাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা।