“টঙ্গীবাড়ীর সবাই মুর্খ” বলে কটাক্ষ করলেন সেবা ক্লিনিকের মালিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
সেকমোকে ডাক্তার বানিয়ে রোগী দেখানোর অপরাধে সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছিলো টঙ্গীবাড়ীতে অবস্থিত সেবা ক্লিনিককে। এবার অভিযোগ উঠছে উপজেলা সরকারি ডিউটিকালীন সময় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে দিয়ে সিজার করানো হয় সমালোচিত এই ক্লিনিকটিতে। এমনকি কিছুদিন পূর্বে করোনা পজিটিভ হওয়ার পর পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই তাকে দিয়ে সিজার করানো হয়। তবে ডাঃ তাসলিমা আক্তারের দাবী, কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার ২ দিন আগে ও ১৪ দিন শেষ হওয়ার একদিন পর সিজার করেছেন তিনি। আর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দাবি কোয়ারেন্টাইন শেষ করার ৩ দিন পর সিজারে অংশ নেয় সে। এদিকে অভিযোগ আরো রয়েছে সরকারি ডিউটিকালীন সময়েও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উক্ত ক্লিনিকে সিজার করে থাকেন।
আর এসব অভিযোগের বিষয় জানতে গেলে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সবাইকে মুর্খ বলে কটাক্ষ করেছেন ক্লিনিকটির মালিক কাকলী ইসলাম (অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের হাতে রয়েছে)।
জানা গেছে, গত ১৩ই মে করোনা পজিটিভ আসে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তারের। এরপর ১৪ দিন অর্থাৎ ২৭ মে পর্যন্ত আইসোলেশনে ছিলেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। কিন্তু ১৫তম দিনেই সেবা ক্লিনিকে আরো একটি সিজারে অংশ নেয় সে। ফলে পুরোপুরি সুস্থ হতে না হতেই সিজারে অংশ নেওয়ায় মরণব্যাধি করোনার আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিজারে অংশ নেওয়ায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
ডিউটিকালীন সময় ও করোনা আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেসরকারী ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে টঙ্গীবাড়ী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার বলেন, এসব বিষয় নিয়েতো অনেক আগেও একবার হয়েছে, আবার একই জিনিস বারবার কেন? করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৪ দিন শেষ হওয়ার একদিন পর সিজারে অংশ নিয়েছি। আপনারা সরাসরি এসে আমার সাথে কথা বলেন। একথা বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্লিনিকটির মালিক পরিচয়দানকারী কাকলী আক্তার সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সিজারের রেজিস্ট্রি খাতা দেখাবে না বলে লুকিয়ে রাখে। সাংবাদিকরা ক্লিনিকে প্রবেশ করতে পারবে না বলে মামলা করার হুমকি প্রদান করেন তিনি। কাকলী আক্তার বলেন, আমি এই ক্লিনিকের মালিক। মুর্খ এলাকায় আমরা ক্লিনিক চালাই। টঙ্গীবাড়ির মানুষ হচ্ছে মূর্খ। এছাড়াও সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে তাদের নানাভাবে কটাক্ষ করে কথা বলে লাঞ্ছিত করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সবাই মুর্খ। একইসময় মালিকপক্ষের আরেকজন ডাক্তার বুলবুল সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
ডাঃ বুলবুল বলেন, যারা অসচেতন তাদেরকে যদি তিনি (কাকলী) মুর্খ বলে থাকেন তবে ঠিক করেছেন।
এসব বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ হাসিনা আক্তার জানান, এর আগে সেকমোকে ডাক্তার বানিয়ে রোগী দেখানোর অভিযোগে ক্লিনিকটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো।
ক্লিনিকে স্বাস্থ্যকর্মীর সিজারের বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ডিউটিকালীন সময় বাইরে কেউ কাজ করতে পারবে না। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। তবে খোঁজ নিয়ে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি ডিউটির সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকতা দিয়ে সিজার করানোর অভিযোগ!
আগের পোস্ট