নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে আমেনা আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গত রবিবার বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে নিহতের শ্বশুরবাড়ি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের হাতরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে কেয়াইন ইউনিয়নের মির্জাকান্দা গ্রামের আলী হোসেনের মেয়ে এবং হাতরপাড়া গ্রামের মোঃ মামুনের স্ত্রী। এ ঘটনায় আমেনা আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে সিরাজদিখান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমেনা আক্তারের স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে।
এদিকে গৃহবধূ আমেনা আক্তারের পরিবারের অভিযোগ, তাকে মানসিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা।
পুলিশ বলছে, নিহতের শরীরে কোন নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। হত্যা না আত্মহত্যা সেটা ময়নাতদন্তের পর বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর পূর্বে মির্জাকান্দা গ্রামের আলী হোসেনের মেয়ে আমেনা আক্তারের সাথে হাতরপাড়া গ্রামের মোকসেদ শেখের ছেলে মোঃ মামুনের সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পরে মোঃ মামুন প্রবাসে চলে যায়। কয়েক বছর পূর্বে মামুন প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসার পর মামুন ও আমেনা আক্তারের ওরশে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয় (১৪ মাস)। তাদের দাম্পত্য জীবনে দীর্ঘদিন ধরে সাংসারিক নানা বিষয়াদি নিয়ে পারিবারিক কলহ চলে আসছিলো। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে বিচার সালিশও হয়েছে। নিহত আমেনা আক্তারের স্বামী মোঃ মামুন কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি হাসান রানা মাসুদের ভাগনে হওয়ার সুবাদে তিনি ও তার ভাতিজা মোঃ শহীদ ঘটনাটি মীমাংসার জন্য জোর তদবির চালাচ্ছে মর্মে স্থানীয় একটি গোপন সূত্র থেকে জানা যায়। আমেনা আক্তারের বড় ভাই ভুক্তভোগী মোঃ ইব্রাহীম ও মোঃ ইমরান জানান, হঠাৎ রবিবার দুপুরে আমার মামা (ঘটক) শ্বশুরবাড়ি থেকে এসে মোবাইলে জানায়, আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। এরপর আমরা আমাদের বোনের বাড়ি গেলে আমার বোনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।
তারা অভিযোগ করে বলেন, আমার বোনকে নির্যাতন করে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিরাজদিখান থানার এস আই মোঃ বিল্লাল জানান, নিহতের শরীরে কোন নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে আমেনা আক্তার দুপুরের পর ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ করেছেন আমেনার পরিবার। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে সঠিক বলা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা। কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এএইচএম সাইফুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ঘটনাটি শুনে থানায় গিয়ে উভয় পরিবারের সাথে কথা বলি। তখন তো তাদের কারো কোন অভিযোগ শুনিনি। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়েছে।