নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে রশুনিয়া ঈমামগঞ্জ রাস্তা এলাকায় মাটি কেটে নেওয়ায় ফসলি জমিতে বড় গর্তের সৃষ্ট হয়েছে। আওয়ামী লীগের এক সমর্থকের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন কৃষকের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাটি কেটে নেওয়ায় এসব জমিতে কয়েক বছর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। ব্রজের হাটী গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন মাটি কাটার ঘটনায় জড়িত ওই ব্যক্তির সঙ্গে জেলার সরকার দলীয় কয়েকজন বড় নেতার সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, তার নাম বলা যাবে না। প্রশাসন যদি মাটি কাটার যন্ত্র ভেঁকু আটক করে তাহলেই তাকে ধরতে পারবেন।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরীফুল আলম তানভীর বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও ওই ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, ছয় মাস ধরে আওয়ামীলীগ নেতাদের নেতৃত্বে চার-পাঁচজন শ্রমিক নিয়োগ করে নেতাদের উপস্থিতিতে ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। তারা প্রতিদিন ১০-১৫ ট্রাক মাটি বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছেন। এসব মাটি রাস্তা ভরাট, বসতঘর নির্মাণ, বিভিন্ন ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলায় রশুনিয়া ঈমামগঞ্জ রাস্তা এলাকায় ২০-২৫ একর ফসলি জমি থেকে এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে জমির বিভিন্ন স্থানে ৭-৮ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রশুনিয়া গ্রামের আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, ফসলী জমির মাটি কাটতে বাধা দিলে তার (আওয়ামী লীগ নেতার) বাহিনী দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। ঈমামগঞ্জ গ্রামের কৃষক সফিক রহমান বলেন, কিছু টাকা দিয়ে তার জমি থেকেও এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাটি তুলে বিক্রি করে দেওয়ায় প্রভাবশালীরা লাভবান হলেও তার জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার তিনি ওইসব জমিতে কোনো চাষাবাদ করতে পারেননি।
সিরাজদিখান পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি কামাল হোসেন মাতবর বলেন, কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে ফেলায় এর উর্বরতা হারিয়ে যায়। তবে ভূমিদস্যুরা যেভাবে মাটি কেটে বিক্রি করছে, তাতে ওইসব এলাকার কৃষক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া ওই এলাকার রাস্তা ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তনও হয়ে যাবে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।