নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের জৈনসার ইউনিয়ন বিএনপির মধ্যে অন্তঃকোন্দল চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন শেখ বালু ভরাট বাণিজ্য, গ্রাম্য বিচার সালিশ, জোর দখল ও আধিপত্য ধরে রাখতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কাঁঠালতলী গ্রামে নাজিম উদ্দিন শেখ তার ভাতিজা সাবেক ইউপি সদস্য ও থানা বিএনপির সদস্য শেখ তৌহিদুল ইসলাম টিটু (৪৭), যুবদল নেতা হৃদয় শেখ (৩০) ও নবীনুর হোসেন নবিকে (৩৮) মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। আহত এই তিনজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগেও তিনি দুইজনকে পিটিয়ে আহত করেছেন। তারা ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে তৌহিদুল ইসলাম টিটু বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় নাজিম উদ্দিন শেখসহ ১৫/১৬ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে অনেকে জানান, মূল ঘটনা ড্রেজার বালু বাণিজ্য এবং বিএনপির দুই নেতার পক্ষের দুই গ্রুপ হওয়ায় তাদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ।
এছাড়া এলাকার অনেকে জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঁঠালতলী গ্রামের আরেক সাবেক ইউপি সদস্য মোফাজ্জল হোসেনের দোকানঘর দখল করতে যান নাজিম উদ্দিন শেখ ও তার লোকজন। তখন তোফাজ্জল হোসেন বাঁধা দিলে তাকে কাঁঠালতলী বিএনপি কার্যালয়ে নিয়ে মারধর করা হয়। বর্তমানে সে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক শেখ মো. আমিনকে মারধর করে নাজিম উদ্দিনের লোকজন। তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত টিটু, হৃদয় ও নবী হোসেন জানান, নাজিম উদ্দিন টাকা খেয়ে আওয়ামী লীগের ইব্রাহিম বাবুকে ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছে। বিচার সালিশে তার মনমতো সিদ্ধান্ত দেয়। বালুভরাট বানিজ্য, দোকানপাট দখলসহ প্রভাব বিস্তার শুরু করেছে। এসব বিষয়ে কেউ কিছু বললেই তার লোকবল, লতব্দী চরের ভাড়াটে গুন্ডাদের নিয়ে হামলা করে আমাদেরকে আহত করে। প্রশাসনের নিকট বিচার চাই ও দলীয়ভাবে তার নানা অপকর্ম তদন্ত করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার চাই।
নাজিম উদ্দিন শেখ বলেন, এগুলো মিথ্যা। তারা নানা অপকর্মে জড়িত। ইছাপুরার হৃদয়, মাসুমসহ কয়েকজন ড্রেজারের চাঁদা নিতে যায়, সেখানে ঝামেলা হয়। টিটুও চাঁদা খায়। বিষয়টি নিয়ে ওদেরকে বললে ওরা ঝামেলা করতে আসলে ওকে ধাক্কা দিয়েছি। কাউকে মারধর করা হয় নাই। ওরা ২টা মোটরসাইকেল ও অফিসের চেয়ার ভাঙচুর করেছে। আর আওয়ামী লীগের সময় বছরখানেক আগে এক লোকের ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দামের একটা গরু ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কয়েকজন মিলে কেটে খেয়ে ফেলেছে। সেটার বিচার করে গরুর দাম দিতে বলেছি। তখন মেনে যায়, পরে শেখ আমিনসহ কয়েকজন এসে ঝগড়া করে। এখন সিদ্ধান্ত মানে না। এ নিয়ে পোলাপানের সাথে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়।
সিরাজদিখান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ মাত্র পেলাম। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।