নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে মধ্যরাতে এক সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িতে হামলা, গৃহবধূর শ্লীলতাহানী, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে। এ ব্যাপারে গৃহবধূ জোসনা মন্ডল (৩৫) বাদী হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে সিরাজদিখান থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গৃহবধূ নয়াগাঁও গ্রামের বাদল মন্ডলের স্ত্রী।
নির্যাতিত জোসনা মন্ডল জানান, দীর্ঘদিনের পূর্বশত্রুতা ও মামলার জের ধরে পূর্ব রামকৃষ্ণদী গ্রামের মৃত ইবনে সাউদ লক্ষনের ছেলে ইকবাল হোসেন (৪০) তার দলবল নিয়ে নানাভাবে আমাদের অত্যাচার করে আসছে। গত রবিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ইকবালের নেতৃত্বে একই গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে ইসহাক (২০), মালিকান্দা গ্রামের মৃত হাফেজ মিয়ার ছেলে মো. বাবু (৩৫), খিদিরপুর গ্রামের মো. বাবুলের ছেলে মোহসিন মজনু, নয়াগাঁও গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে মো. ফারুক (৩০)সহ আরো ৩/৪ জন, চাপাতি, হকিস্টিক, লোহার রড, বাঁশের লাঠি নিয়ে হামলা করে আমার স্বামীকে মেরে ফেলার জন্য। দরজা খুলতে বললে আমরা দরজা না খোলায় লাথি দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। ঘরের আসবাবপত্র ভেঙ্গে আমাদের ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। আমার স্বামীকে মারার জন্য ভিতরের ঘরে প্রবেশের সময় আমি বাধা দিলে আমার পরিহিত কাপড় এবং আমার ব্লাউজ টেনে ছিঁড়ে ফেলে আমার শ্লীলতাহানী ঘটায়। এ সময় আমার গলায় ১ ভরি ওজনের ১ টি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং ধস্তাধস্তিতে আমার হাতের একটি শাঁখা ভেঙ্গে ফেলে। আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন চলে আসলে তারা পালিয়ে যায়। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে বিষয়টি জানিয়েছি। আমার স্বামী হত দরিদ্রদের ১০ টাকা কেজির চাল এর ডিলার। তার বিরুদ্ধে এখন তারা অপপ্রচার করছে। আমার স্বামী তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাই আমি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ডিলার এর খাতাপত্র ট্যাগ অফিসার উপজেলা সহাকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের নিকট জমা দিয়েছি। এসব বাড়িতে থাকলে তারা লুট করে নিতে পারে এবং অপপ্রচারটি বাস্তবায়ন ঘটাতে পারে। এ ঘটনায় আমি সিরাজদিখান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমরা কেউ তাদের বাড়ি যাইনাই। তার স্বামী হত দরিদ্রদের ১০ টাকা কেজির চাউলের ডিলার। দরিদ্রদের চাউল ঠিকমত না দেওয়ায় আমরা যুবকরা মিলে এলাকায় সেই দরিদ্রদের ত্রাণ দিয়েছি। এ নিয়ে কয়েকদিন আগে তার স্বামী বাদলের সাথে দ্বন্দ্ব হয়েছিল। তারা আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা করেছে। বিষয়টি আমি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।
সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফরিদ উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।