নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে মৎস্য খামারের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ফসলী জমিতে অবৈধ ড্রেজিং বসিয়ে বালু মাটি উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে বাসাইল ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি আব্দুস সালাম মনুর বিরুদ্ধে। প্রশাসনের নজর এড়াতে মৎস্য খামারের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিনরাত চলছে অবৈধ ড্রেজিংয়ের কর্মযজ্ঞ। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার অর্ধশতাধিক ফসলী জমি। কৃষিজমির মালিকরা প্রভাবশালী ওই ইউপি সদস্যের অবৈধ ড্রেজিং বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের চরবিশ্বনাথ মৌজাস্থ চরবিশ্বনাথ উত্তর চকের প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে অবৈধ ড্রেজিং বসিয়ে তিন বছর যাবৎ বালু উত্তোলন করে এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে আসছেন বাসাইল ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনু ও তার লোকজন। সরকারী নিয়ম-নীতির কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে নির্বিঘ্নে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। ৩০-৪০ ফুট গভীর করে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলনের ফলে জমিটির চারপাশে প্রায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জমি ভাঙন ধরেছে। এছাড়া ড্রেজিংয়ের কারণে অর্ধশতাধিক ফসলী জমি ভাঙ্গন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরবিশ্বনাথ মৌজাস্থ চরবিশ্বনাথ উত্তর চকের কৃষিজমিগুলোতে ব্লক করে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ করা হয়। বর্তমানে সেসব জমিগুলোর ফসল কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। তবে ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনুর অবৈধ ড্রেজিংয়ের কারণে ফসলের কোন প্রকার ক্ষতি না হলেও জমি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। কারণ চরবিশ্বনাথ উত্তর চকের মাঝখানে প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে ড্রেজার বসিয়ে ৩০-৪০ ফুটি গভীর করে বালু মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে এবং ড্রেজিংয়ের ফলে ধীরে ধীরে গভীরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যাতে করে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ওই জমির পার্শ্ববর্তী জমির মাটি ভাঙ্গন ধরবে। ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আব্দুস সালাম মনু স্থানীয় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কৃষিজমির ক্ষতি করে দাপটের সাথে ফসলী জমি থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে চলেছেন। ওই এলাকার অনেক কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও দলীয় ও স্থানীয় প্রভাবের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না। এদিকে ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনু স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীকে সাথে নিয়ে অবৈধভাবে ফসলী জমির বালু মাটি বিক্রি করে চলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অন্যদিকে গত ২২ মে স্থানীয় দৈনিকসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনুর অবৈধ ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ কারণে অনেকটা দাপটের সাথেই চালাচ্ছেন অবৈধ ড্রেজিংয়ের কর্মযজ্ঞ। ভুক্তভোগী কৃষক সাহেব আলী বলেন, মনু মেম্বারের ড্রেজারের কারণে আমার জমি ভাঙতে শুরু করেছে। আমি ছাড়াও অনেকের জমি ভাঙছে। করোনার কারণে ইউএনও স্যারের কাছে যেতে পারিনাই। তবে আমরা তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে শিঘ্রই যাবো। এ ব্যাপারে বাসাইল ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি আব্দুস সালাম মনুর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলামের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।